নয়াদিল্লি: বিদেশ থেকে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট আমদানিতে লাগাম টেনে ধরল কেন্দ্রীয় সরকার। যে কেউ চাইলেই আর বিদেশ থেকে ল্যাপটপ বা ট্যাবলেট আনাতে পারবেন না। বিদেশি পণ্য আমদানির লাইসেন্স রয়েছে যাঁদের, একমাত্র তাঁরাই আমদানি করতে পারবেন (Electronics Import)। দেশীয় সংস্থার তৈরি ল্যাপটপ, ট্য়াবলেটের উৎপাদন এবং বিক্রিতে জোর দিতেই এমন সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের। এখন থেকেই চালু হল এই নয়া নিয়ম। (Laptops Import)


কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেন ট্রেড। একমাত্র বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির লাইসেন্স রয়েছে যাঁদের, তাঁরাই বিদেশ থেকে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট আমদানি করতে পারবেন। তবে আগের মতো যত খুশি আনানো যাবে না। বৈধ লাইসেন্স থাকলে সীমিত সংখ্যক ল্যাপটপ, ট্যাবলেটই আমদানি করা যাবে বিদেশ থেকে। তবে মূলধনী পণ্যকে এই নয়া নীতির বাইরে রাখা হয়েছে।


১৪০ কোটির দেশে চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের জোগান দিতে, বেশ কয়েক বছর ধরেই আত্মনির্ভরতা বৃদ্ধির পক্ষে সওয়াল করে আসছে কেন্দ্রীয়। আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতকে পণ্য উৎপাদনের ভরকেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরার প্রচেষ্টা চলছে। শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক সরঞ্জামই বা পণ্যই নয়, মোটর যন্ত্রাংশ থেকে প্রযুক্তি সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী দেশীয় সংস্থাগুলিকে সামনের সারিতে তুলে আনতেও উদ্যোগী সরকার। 


আরও পড়ুন: Best Multibagger Stock: বিনিয়োগকারীদের ভাগ্য খুলেছে এই শেয়ারে, রিটার্নের জায়গায় লটারি পেয়েছেন ইনভেস্টাররা


সেই লক্ষ্যে পৌঁছতেই এবার বিদেশ থেকে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট আমদানিতে কেন্দ্র লাগাম টেনে ধরল বলে দিল্লি সূত্রে খবর। আন্তর্জাতিক বাজারের উপর ভরসা না করে, দেশীয় সংস্থাগুলির উপর মানুষকে নির্ভরশীল করে তুলতে চায় সরকার। 


কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে আগামী দিনে আমদানিকৃত ল্যাপটপ, কম্পিউটার, ট্যাবলেট-সহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দাম কমতে পারে বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। এর আগে, এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকের যে হিসেব সামনে আসে, তাতে আমদানিকৃত ল্যাপটপ, ট্যাবলেটের চাহিদায় ৬.২৫ শতাংশ বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যায়, যার বাজারমূল্য ছিল প্রায় ১৯৭০ কোটি ডলার। 


তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে। বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, দেশীয় পণ্যের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে ভাল কথা। তাতে বিদেশি সংস্থাগুলির কাছে ভারতে উৎপাদনকেন্দ্র গড়ে তোলা ছাড়া উপায় থাকবে না। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ফলে Dell, Acer, স্যামসাং, প্যানাসনিক, অ্যাপল, লেনোভো এবং HP-র মতো সংস্থা বিপাকে পড়বে বলে দাবি তাঁদের। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের বাজারে যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে এই সংস্থাগুলির। গ্রাহকরাও চোখ বন্ধ করে ভরসা করেন এই সব সংস্থার পণ্যের উপর। তাঁদের কাছে দেশীয় পণ্য কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকে।


তবে কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের পর দেশীয় সংস্থাগুলি চাঙ্গা হয়ে উঠেছে শেয়ার বাজারে। শেয়ার বাজারে এদিন অ্যাম্বার এন্টারপ্রাইজেস ইন্ডিয়া লিমিটেডের শেয়ারে ৩.৩ শতাংশ বৃদ্ধি লক্ষ্য় করা যায়। ৫.৫ শতাংশ বৃদ্ধি হয় ডিক্সন টেকনোলজিস ইন্ডিয়া লিমিটেডের। পিজি ইলেক্রোপ্লাস্ট সংস্থার শেয়ারে বৃদ্ধি ঘটে ২.৮ শতাংশ।