নয়াদিল্লি: তথ্য বলছে, কেন্দ্রও বলছে, করোনার প্রকোপে আগের থেকে কিছুটা লাগাম পরানো গিয়েছে। লকডাউন তুলে নিলেও হয়তো কয়েক সপ্তাহ অবস্থার তেমন ইতরবিশেষ হবে না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন, জুলাইয়ের শেষ বা অগাস্ট থেকে এ দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আবার বাড়তে পারে।


তাঁরা বলছেন, করোনা সংক্রমণ কখন চূড়ান্ত হবে তা নির্ভর করছে, কড়াকড়ি কমানোর পর এ দেশে শারীরিক দূরত্ব রাখার নির্দেশ কতটা মানা হবে আর সংক্রমণ কতটা ছড়িয়েছে তার ওপর। এখন যেমন রোজকার করোনা আক্রান্ত বা মৃতের সংখ্যা তেমন একটা বাড়ছে না, কিছুদিন পর এই গ্রাফ নীচের দিকে নামবে অর্থাৎ কমবে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। হয়তো এভাবে কেটে যাবে কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস। কিন্তু এরপরেও দেশে করোনা ফিরতে পারে, আর তাকে বলা হবে করোনার দ্বিতীয় প্রাদুর্ভাব। বলেছেন শিব নাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর শমিত ভট্টাচার্য।

এই বর্ষা অর্থাৎ জুলাইয়ের শেষ বা অগাস্ট থেকে করোনা আবার এ দেশে ফিরে আসতে পারে। তখন তা কতটা হাহাকার তৈরি করবে তা নির্ভর করছে শারীরিক দূরত্ব রাখার ওপর। বলেছেন শমিতবাবু।

সহমত হয়েছেন বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্সের অধ্যাপক রাজেশ সুন্দরেশান। তাঁরও আশঙ্কা, স্বাভাবিক জীবনচর্যা শুরু হলে করোনা সংক্রমণ আবার ফিরতে পারে। চিনে ঠিক এমনটা ঘটেছে বলে তিনি জানিয়েছেন। শমিতবাবু বলছেন, চিন ও ইউরোপের সাম্প্রতিক গবেষণাগুলিতে দেখা যাচ্ছে, একবার কমে যাওয়ার পর আবার মাথা তুলছে করোনা। যাঁরা একবার এই অসুখ থেকে সেরে উঠেছেন আবার তাঁরা আক্রান্ত হচ্ছেন। অর্থাৎ একবার এই অসুখ হয়ে গেলে তা শরীরে রোগ প্রতিরোধক অ্যান্টিবডি জন্ম দিচ্ছে বলে যা মনে করা হচ্ছে তা ঠিক নয়। আর ফের করোনা মাথা তুললে দেশের সব মানুষই অসহায় হয়ে পড়বেন তার সামনে।

তিনি বলেছেন, যতক্ষণ না বাজারে টিকা এসে পৌঁছচ্ছে, ততক্ষণ আমাদের সাবধান থাকতে হবে। কোনও জায়গা থেকে দ্বিতীয়বার করোনা সংক্রমণের খবর এলেই সে জায়গা তখনই কোয়ারান্টাইন করে ফেলতে হবে, এলাকার মানুষকে মেনে চলতে হবে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং। করোনা পরীক্ষাও করতে হবে দ্রুত। বর্ষায় ভারতের বহু জায়গায় জ্বরজারি দেখা দেয়। তাই জ্বরের প্রাথমিক লক্ষণ অগ্রাহ্য করা উচিত নয়। বিশেষ করে করোনা হটস্পটগুলিতে পরীক্ষার সংখ্যা অনেক বাড়াতে হবে। বলেছেন শমিতবাবু।