নয়াদিল্লি : যতটা সামনে এসেছে তার থেকেও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পাকিস্তানের সরকারি নথিই বলছে সেকথা। 'অপারেশন সিঁদুরে' পাকিস্তানের যতগুলি টার্গেট গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে ভারতের নিরাপত্তাবাহিনী জানিয়েছে, বাস্তবে তার থেকেও বেশি টার্গেট করা হয়েছে। পাকিস্তানই বলছে একথা। পাকিস্তানের অপারেশন বুনইয়ান উন মরসুস-এর তথ্য অনুযায়ী, ভারতের নিরাপত্তাবাহিনী যতগুলি টার্গেটে আঘাত হানার কথা বলেছে, বাস্তবে তার থেকে আরও সাতটি বেশিকে নিশানা করা হয়েছে। সরকারি সেই দলিলের ম্যাপ অনুযায়ী, পেশওয়ার, ঝাং, সিন্ধের হায়দ্রাবাদ, পাঞ্জাবের গুজরাত, ভাওয়ালনগর, আটোক ও চোরেও টার্গেট করেছে ভারতের নিরাপত্তাবাহিনী। গত মাসে অপারেশন সিঁদুরের পর ভারতের নিরাপত্তাবাহিনীর তরফে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে অপারেশন সংক্রান্ত তথ্য জানানো হয়। পাকিস্তানের বক্তব্য, সেই সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের বায়ুসেনা ও ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনসের তরফে যে তথ্য দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে উপরের এই সাতটি লোকশনের উল্লেখ ছিল না বলে সরকারি নথিতে উল্লেখ পাকিস্তানের। 

অর্থাৎ নতুন তথ্য অনুযায়ী, ভারতের নিরাপত্তাবাহিনী যতটা জানিয়েছে তার থেকেও গভীরে গিয়ে পাকিস্তানে প্রত্যাঘাত করে এসেছে। নতুন এই তথ্য এটাও স্পষ্ট করছে যে 'অপারেশন সিঁদুরের' পর কেন তড়িঘড়ি পাকিস্তান ভারতের কাছে সংঘর্ষবিরতির আবেদন জানায়। বাস্তবে, ভারতের প্রত্যাঘাতে শিহরিত হয়ে উঠেছিল পাকিস্তান, আরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করেছিল। সেই ভয় থেকেই সংঘর্ষবিরতির পথে আসে। এমনই বলছে ওয়াকিবহাল মহল। শুধু তা-ই নয়, পাকিস্তানের এই সরকারি তথ্য এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে, ভারতেরও বড় ক্ষতিসাধন করেছে বলে ইসলামাবাদের তরফে যে দাবি করা হয়েছিল তা আদতে মিথ্যা দাবি ছিল। 

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহের প্রাণহানির জবাবে পাল্টা প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটে ভারত। 'অপারেশন সিঁদুর' চালিয়ে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়। তারপর কয়েকদিন ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে কার্যত যুদ্ধের আবহ তৈরি হওয়া। পাকিস্তান ভারতকে টার্গেট করে ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র পাঠালে সেসব গুলি করে মাটিতে নামায় ভারতের সশস্ত্র বাহিনী। শুধু তা-ই নয়, পাকিস্তানেও পাল্টা প্রত্যাঘাত শুরু করে ভারত। আতঙ্কে নড়েচড়ে বসে পাকিস্তান এবং শেষমেশ ডিজিএমও পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশের সংঘর্ষবিরতি।

এর পরপরই কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানের উপর আরও চাপ তৈরি করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাংসদদের প্রতিনিধি পাঠায় ভারত। সাতটি প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়। সকল প্রকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের জাতীয় ঐকমত্য এবং দৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরাই তাদের লক্ষ্য।