নয়াদিল্লি: পহেলগাঁও নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে টানাপোড়েন। শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) সম্মেলনে যৌথ বিবৃতিতে সই করল না ভারত। বিবৃতিতে পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার উল্লেখ ছিল না, বরং বালুচিস্তানে অশান্তির নেপথ্যে ভারতের ভূমিকার উল্লেখ ছিল। এর প্রতিবাদেই ভারত যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা থেকে বিরত থাকল ভারত। (Shanghai Cooperation Organisation)
শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনে যোগ দিতে চিনে রয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সম্মেলন চলাকালীন জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা এবং ২৬ জন নিরীহ মানুষের প্রাণ চলে যাওয়ার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। সন্ত্রাস হামলার জবাবে, আত্মরক্ষার্থেই যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে Operation Sindoor অভিযান চালানো হয়, তা তুলে ধরেন। (Pahalgam Terror Attack)
এর পর সম্মেলনের আলোচ্য বিষয় এবং তা নিয়ে অবস্থান বোঝাতে যে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, তাতে সই করার পালা আসে সদস্য দেশগুলির। কিন্তু ওই যৌথ বিবৃতি নিয়ে আপত্তি তোলে ভারত। যৌথ বিবৃতিতে পহেলগাঁওয়ের কোনও উল্লেখ নেই কেন প্রশ্ন তোলা হয়। পাশাপাশি, বালুচিস্তানে অশান্তি সৃষ্টির নেপথ্যে ভারতের ভূমিকার কথা কেন লেখা রয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়।
শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের চেয়ার এই মুহূর্তে চিনের দখলে। পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের দহরম মহরমের কথা সর্বজনবিদিত। তাই ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তানের দাবি মেনেই পহেলগাঁওয়ের প্রসঙ্গ বাদ দেওয়া হয়েছে যৌথ বিবৃতি থেকে। পরিবর্তে বালুচিস্তানে অশান্তির জন্য ভারতের দিকে আঙুল তোলা হয়েছে। তাই ওই যৌথ বিবৃতিতে সই করতে রাজি হননি রাজনাথ।
গত কয়েক মাসে বালুচিস্তান থেকে লাগাতার অশান্তির খবর আসছে। পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে সেখানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বিচ্ছিন্নতাকামী সংগঠনগুলি। ট্রেন হাইজ্যাক থেকে সেনার কনভয়ে বিস্ফোরণ, কিছুই বাদ যাচ্ছে না। বালুচিস্তানে অশান্তি সৃষ্টির জন্য ভারতকে বরাবর দায়ী করে আসছে পাকিস্তান। কিন্তু ভারত সেই অভিযোগ বার বার খণ্ডন করেছে। সন্ত্রাসে মদত জোগানোয় অভিযুক্ত ইসলামাবাদ আসলে আন্তর্জাতিক মহলের নজর ঘোরাতে চাইছে বলে অভিযোগ দিল্লির।
এই মুহূর্তে চিনের চিংদাওয়ে শাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন সম্মেলন চলছে। সদস্য দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা ওই সম্মেলনে যোগদান করেছেন। রাজনাথের পাশাপাশি, রাশিয়া, পাকিস্তান, চিন, বেলারুস, ইরান, কাজাখস্তান, কিরগিস্তান, তাজিকিস্তান ও উজবেকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রীও রয়েছেন সেখানে। পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতেই এই সম্মেলনের আয়োজন হয়।
এবারে ওই সম্মেলনে যোগ দিয়ে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সকলকে একজোট হত আহ্বান জানান রাজনাথ। তিনি বলেন, “শান্তি এবং সমৃদ্ধি সন্ত্রাসের সঙ্গে সহাবস্থান করতে পারে না। যে বা যারা সন্ত্রাসে মদত জোগায়, নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে সন্ত্রাসের আশ্রয় নেয়, তাদের এর ফল ভুগতে হবে। কোনও কোনও দেশ সীমান্ত সন্ত্রাসকে নিজেদের নীতি বানিয়ে বসে রয়েছে, জঙ্গিদের আশ্রয় দিচ্ছে তারা। এই দ্বিচারিতা বরদাস্ত করা উচিত নয়।” কিন্তু যৌথ বিবৃতিতে সই করার সময় এলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। সই করা থেকে বিরত থাকে ভারত।