নয়াদিল্লি : মুম্বই হামলার মাস্টারমাইন্ড তথা মূলচক্রী হাফিজ সইদকে প্রত্যর্পণ করুন। এনিয়ে পাকিস্তানকে অনুরোধ করা হয়েছে বলে জানালেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি।


জঙ্গি কার্যকলাপে আর্থিক সহায়তার একাধিক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০১৯ সাল থেকে পাকিস্তানের জেলে আছে হাফিজ সইদ। তার সঙ্গে জেলবন্দি নিষিদ্ধ জামাত-উদ-দাওয়ার একাধিক নেতাও। গত দশকে একাধিক বার গ্রেফতার হয়েছে এবং মুক্তিও পেয়েছে হাফিজ সইদ। বারবার সশস্ত্র অভিযানে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকারও করেছে। ২০০৮ সালে ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে হামলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে লস্কর ই তৈবার বিরুদ্ধে। যে ঘটনায় ৬ আমেরিকান-সহ ১৬৬ জন নিরীহ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছিল। সেই লস্কর ই তৈবার সামনের সারির সংগঠন হাফিজ নেতৃত্বাধীন জামাত-উদ-দাওয়া। কাশ্মীরের বিতর্কিত এলাকায় বছরের পর বছর ধরে সক্রিয় রয়েছে জঙ্গি সংগঠন লস্কর ই তৈবা।


মুম্বই হামলার বিচারের জন্য এর আগেও একাধিকবার হাফিজ সইদকে ভারতের হাতে প্রত্যপর্ণের দাবি জানানো হয়েছে পাকিস্তানের কাছে। কিন্তু, উভয় দেশের মধ্যে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় বিষয়টি জটিল হয়ে রয়েছে। 


২০২২ সালের এপ্রিল মাসে পাকিস্তানের আদালত জঙ্গি কার্যকলাপে আর্থিক সহায়তার দু'টি মামলায় হাফিজ সইদকে ৩১ বছর কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে। উভয় মামলাতেই একাধিক নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সইদ। তবে, তার বর্তমান কারাভোগের কথা মাথায় রেখে অন্য মামলায় কী পরিণতি হবে তা সময় বলবে। পাকিস্তানের বর্তমান আইন অনুযায়ী, যদি না কোনও সাজা খারিজ করা হয় বা আবেদনের ভিত্তিতে কমানো হয়, তাহলে আর অন্যদের মতোই সইদকেও পুরো সাজা কাটতে হবে। ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড জঙ্গির তালিকায় রয়েছে হাফিজ সইদ। 


এপ্রসঙ্গে উল্লেখ, মুম্বই হামলার চক্রী হাফিজ সইদের ছেলে তথা লস্কর ই তৈবার নেতা হাফিজ তালহা সইদকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করতে প্রস্তাব এনেছিল ভারত। সেটি সমর্থন করে আমেরিকা। ইউএপিএ আইনের ধারায় আগেই তালহাকে 'জঙ্গি' ঘোষণা করেছে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ৮ এপ্রিল একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানায়, তালহা লস্করের উচ্চপদস্থ নেতা। সঙ্গে বলা হয়, 'ভারত এবং আফগানিস্তানে ভারতীয় স্বার্থে আঘাত হানতে নিয়োগ, অর্থ সংগ্রহ, ষড়যন্ত্র করা এবং তার বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে তার।' তবে এর পরও তাকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ তালিকায় রাখার প্রস্তাবে সায় দেয়নি চিন। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ, এটা নতুন কিছু নয়। চলতি বছরেই অন্তত পাঁচ জন জঙ্গির ক্ষেত্রে এক জিনিস করেছে চিন।