ঢাকা: ফের অশান্ত বাংলাদেশ। বাংলাদেশের কোটা বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যু ঘিরে নতুন করে উত্তেজনা। 'ইনকিলাব মঞ্চের' আহ্বায়কের মৃত্যুর খবর পেতেই, চট্টগ্রামে ভারতের অ্যাসিস্ট্যান্ট হাইকমিশনের বাইরে অবস্থানে বসে একদল বিক্ষোভকারী।
বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে, ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেস নোটে শেখ হাসিনা-বিরোধী ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র উগ্রপন্থী নেতা শরীফ ওসমান হাদির উপর হামলা সম্পর্কে যে দাবি করা হয়েছে, ভারত তা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করছে।
বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পক্ষে আমাদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "ভারত কখনই তার ভূখণ্ডকে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করার অনুমতি দেয়নি। আমরা আশা করি যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, যার মধ্যে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যও অন্তর্ভুক্ত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে যাতে বাংলাদেশ একটি নির্বাচিত ম্যান্ডেটের সরকারে ফিরে যেতে পারে।"
বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে চলছিল অবস্থান বিক্ষোভ। মুহুর্মুহু আওয়ামি লিগ ও ভারতবিরোধী স্লোগানে উত্তপ্ত হয় গোটা এলাকা। পরবর্তীকালে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ। সরিয়ে দেওয়া হয় বিক্ষোভকারীদের। বাংলাদেশের কোটা বিরোধী আন্দোলনের ও আওয়ামি লিগ নিষিদ্ধের দাবি নিয়ে আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গেছিল এই শরিফ ওসমান বিন হাদিকে।
এমনকী, আগামী নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করারও ঘোষণা করেছিলেন তিনি। গত শুক্রবার, বাংলাদেশের বিজয়নগরে প্রচার চলাকালীন গুলিবিদ্ধ হন। রিকশায় বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সেইসময় মোটরবাইকে করে এসে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। গুরুতর জখম অবস্থায় হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীকালে, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার রাতে মৃত্যু হয় তাঁর। আর তারপরই দেশ জুড়ে ক্ষোভ আছড়ে পড়ে। 'ইনকিলাব মঞ্চের' ফেসবুক পেজে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, 'ভারতীয় আধিপত্যবিরোধী সংগ্রামে' 'শহিদ' হয়েছেন ওসমান বিন হাদি। আগামী ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে নির্বাচন। তার আগে এমন ঘটনায় রীতিমতো উত্তপ্ত পদ্মাপার। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনের আগে অশান্তির বাতাবরণ টিকিয়ে রাখতেই এই পরিস্থিতি বাংলাদেশে।