নয়াদিল্লি : তীব্র গরমে নাজেহাল বঙ্গবাসী। সকাল থেকেই সূর্যের প্রখর তাপে শরীর জ্বালাপোড়া করছে। নিত্যদিন এমনই ছবি ধরা পড়ছে। মাঝেমধ্যে সন্ধের দিকে একটু আধটু হাওয়া দিলেও, তাতে বিশেষ লাভ হচ্ছে না। বেলা একটু গড়ালেই বাড়ির বাইরে বেরোতে কালঘাম ছুটছে সকলের। এই পরিস্থিতিতে গতকাল রাজ্যের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু, তাতেও স্বস্তি কই ? তবে, স্বস্তির খবর একেবারে যে নেই তা নয়। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুযায়ী, এবার স্বাভাবিকের থেকে বেশি বর্ষা দেখবে দেশ।
কৃষিক্ষেত্রের জন্য এটি অত্যন্ত ভাল খবর। কারণ, এই ক্ষেত্রের ওপরই দেশের ১৮ শতাংশ জিডিপি নির্ভর করে। দেশের জনসংখ্যার ৪২ শতাংশই কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। দেশের সামগ্রিক কৃষিজমির পরিপ্রেক্ষিতে বলতে হলে, ৫২ শতাংশই বর্ষার বৃষ্টির জলের উপর নির্ভরশীল। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে IMD প্রধান মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলছেন, "চার মাসের (জুন থেকে সেপ্টেম্বর) বর্ষা মরসুমে এবার স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে গোটা দেশে। যার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী গড়ে ৮৭ সেমি বৃষ্টিপাতের ১০৫ শতাংশ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।" ভারতীয় উপমহাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বর্ষার জন্য দায়ী এল নিনোরও এ বছর সেভাবে প্রভাব ফেলার সম্ভাবনা কম।
বর্ষা প্রধানত জুনের ১ তারিখ থেকে কেরল দিয়ে শুরু হয়। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি করে তা শেষ হয়ে যায়। অবশ্য দিন দিন বৃষ্টিপাতের দিনসংখ্যা কমছে বলে মত জলবায়ু বিজ্ঞানীদের। তবে, তীব্র বৃষ্টিপাত বাড়ছে। যার জেরে প্রায়ই বন্যা ও খরার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বর্ষায় স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে মানে এই নয় যে, তা সমানভাবে সর্বত্র হবে।
মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকেই দহন জ্বালা। মাঝে ১-২ দিন একটু হাওয়া দিলেও, পরিস্থিতি তেমন বদলাচ্ছে না কিছুতেই। সকালে রাস্তায় বেরোলেই অস্বস্তিকর গরম, সঙ্গে দোসর আর্দ্রতা। কলকাতা থেকে জেলা, সব জায়গাতেই কমবেশি ছবিটা একই। তবে এই ছবি যে শুধু পশ্চিমবঙ্গের, তা বললে ভুল হবে একেবারেই। দেশের একাধিক গ্রীষ্মপ্রধান রাজ্য়ের ছবিগুলি মোটামুটি একই। যে জায়গাগুলোয় মার্চে মনোরম পরিবেশ থাকে, সেই সমস্ত রাজ্যেই তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে মার্চের মাঝামাঝি থেকেই। চড়চড় করে বাড়ছে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, সঙ্গে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে আর্দ্রতা। পরিবেশবিদেরা বলছেন, এপ্রিল এবং জুন মাসে চলতি বছর গোটা ভারত যে গরম অনুভব করবে, তা এর আগে কখনও করেনি।