নয়াদিল্লি: বিধানসভা ভোট কড়া নাড়ছে উত্তরপ্রদেশের দোরগড়ায়। আগামী বছরই গোয়া, পঞ্জাব ও মণিপুরের সঙ্গে দেশের সবচেয়ে বড় রাজ্যে বিধানসভার ভোট। হিন্দি হার্টল্যান্ডে আধিপত্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে কৌশলগত গুরুত্বের দিক থেকে উত্তরপ্রদেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতা খুবই তাৎপর্য্যপূর্ণ।
বিধানসভা ভোটে কার পক্ষে রায় দেবে উত্তরপ্রদেশ? যোগী আদিত্যনাথ, না কি অখিলেশ যাদব? মায়াবতী না কি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী? কী ভাবছেন ভোটাররা? কী ইঙ্গিত মিলল সি ভোটারের সমীক্ষায়?
লোকসভা নির্বাচনে বাকি এখনও প্রায় তিন বছর। তার আগে উত্তরপ্রদেশের নির্বাচন কার্যত কোলসভার ড্রেস রিহার্সাল। সবমিলিয়ে চব্বিশের লোকসভা ভোটের দামামা যেন এখন থেকেই বেজে গেছে।
একদিকে নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহর নেতৃত্বাধীন বিজেপি। যাদের কাছে এই লড়াই প্রেস্টিজ ফাইট।অন্যদিকে, বিজেপি-বিরোধীরা। যাদের কাছে এই ভোট লিটমাস টেস্ট।
কিন্তু, শেষমেশ বাজিমাত করবে কে? উত্তরটা মিলতে পারে আগামী বছর উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে। ২০২৪ সালের লোকসভা ভোট ফাইনাল হলে, আগামী বছর উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোট নিঃসন্দেহে সেমিফাইনাল। কারণ, দিল্লির রাস্তা যায় উত্তরপ্রদেশ হয়ে। তাই এখন প্রশ্ন হল, উত্তরপ্রদেশ এবার কার পক্ষে রায় দেবে? যোগী আদিত্যনাথ?অখিলেশ যাদব?মায়াবতী? নাকি প্রিয়ঙ্কা গান্ধী?
উত্তরপ্রদেশের ভোটাররা কী ভাবছেন? তার আঁচ পেতেই সেখানে জনমত সমীক্ষা চালিয়েছে সি ভোটার। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় মোট আসন ৪০৩। ম্যাজিক ফিগার ২০২।
সি ভোটারের জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, এর মধ্যে ২৫৯ থেকে ২৬৭টি আসন জিতে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে বিজেপি।অখিলেশের সমাজবাদী পার্টি ১০৯ থকে ১১৭টি আসন পেতে পারে। মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি জিততে পারে ১২ থেকে ১৬টি আসন। প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর নেতৃত্বে লড়েও, কংগ্রেস মাত্র ৩ থেকে ৭টি আসন জিততে পারে। অন্যান্যর ঝুলিতে যেতে পারে ৬ থেকে ১০টি আসন।
এক্ষেত্রে সমীক্ষার পূর্বাভাস অনুযায়ী, বিজেপির আসন গত বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় ৬২ আসন কমতে পারে। ৬৫-র মতো আসন বেশি পেতে পারে সমাজবাদী পার্টি। বিএসপি-র ৫ ও কংগ্রেসের দুটি আসন কমতে পারে।
এবার দেখে নেওয়া যাক, উত্তরপ্রদেশে কোন দল কত শতাংশ ভোট পেতে পারে? সি ভোটারের জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, বিজেপি প্রায় ৪২ শতাংশ ভোট পেতে পারে। সমাজবাদী পার্টি ৩০ শতাংশ,বহুজন সমাজ পার্টি ১৬ শতাংশ এবং কংগ্রেস ৫ শতাংশ ভোট পেতে পারে। অন্যান্য দল পেতে পারে ৭ শতাংশ ভোট।
সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০১৭-র বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় বিজেপির ভোটের হার ০.৪ শতাংশ বাড়তে পারে। সমাজবাদী পার্টির ভোটের হার ৬.৬ শতাংশ বাড়তে পারে। অন্যদিকে, ধাক্কা খেতে পারে বিএসপি ও কংগ্রেস। তাদের ভোটের যথাক্রমে ৬.৫ শতাংশ ও ১.২ শতাংশ কমতে পারে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিরোধী জোট কতটা দানা বাধবে, তা অনেকাংশেই নির্ভর করতে পারে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটের ফলের ওপর।
গত ৪ সপ্তাহে উত্তরপ্রদেশের ৪০৩টি কেন্দ্রের ৪৪ হাজার ৪৩৬ জনেরও বেশি ভোটারের সঙ্গে কথা বলেছেন সমীক্ষকরা।উত্তরপ্রদেশের ভোটে যোগী আদিত্যনাথের চ্যালেঞ্জ ক্ষমতা ধরে রাখা। অখিলেশ এবং মায়াবতীর চ্যালেঞ্জ হারানো ক্ষমতা পুনরুদ্ধার। প্রিয়ঙ্কাকে ঘিরে কৌতুহল, যে তিনি সেখানে আদৌ দাগ কাটতে পারবেন কিনা।শেষমেশ কী হবে, তা বোঝা যাবে বছর গড়ালেই।