নয়াদিল্লি: করোনা কেড়ে নিল আরেক রাজনীতিবিদের প্রাণ। এবার প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাষ্ট্রীয় লোকদল (আরএলডি) প্রধান চৌধুরি অজিত সিংহ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬। সম্প্রতি করোনা পজিটিভ হন। চিকিৎসা চলছিল গুরগাঁওয়ের একটি হাসপাতালে।
অজিত সিংহের ছেলে তথা প্রাক্তন সাংসদ জয়ন্ত চৌধুরি ট্যুইটারে বাবার মৃত্যুর খবর জানান। তিনি লেখেন, গতকাল থেকেই অজিত সিংহের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। বৃহস্পতিবার তিনি মারা যান। গত ২০ তারিখ অজিত সিংহের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
পরে, প্রয়াত নেতার ব্যক্তিগত সচিব জানান, এদিন ভোর ৬টা ২০ নাগাদ মারা যান অজিত সিংহ। গত কয়েকদিন ধরে তিনি আইসিইউ-তে ছিলেন। রাখা হয়েছিলে ভেন্টিলেশন।
খড়্গপুর আইআইটি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির প্রাক্তনী অজিত সিংহ ১৯৮৬ সালে প্রথমবার রাজ্যসভায় মনোনীত হয়েছিলেন।
অজিত সিংহের বাবা চৌধুরি চরণ সিংহ, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। সাতবারের লোকসভা সাংসদ অজিত সিংহ মধ্যপ্রদেশের বাঘপট থেকে নির্বাচিত হন। তিনি কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রীও ছিলেন।
উত্তরপ্রদেশের জনপ্রিয় নেতা ছিলেন চৌধুরি অজিত সিংহ। জাট-অধ্যুষিত পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে তাঁর দল আরএলডি-র ভাল প্রভাব রয়েছে।
অজিত সিংহের প্রয়াণে অনেকেই শোকবার্তা পাঠিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ লেখেন, অজিত সিংহের প্রয়াণে দুঃখ হচ্ছে। তিনি কৃষকদের স্বার্থরক্ষায় সক্রিয় ছিলেন। জনপ্রতিনিধি ও মন্ত্রী হিসেবেও তিনি নিজস্ব একটা জায়গা তৈরি করেছিলেন। তাঁর পরিবারকে সমবেদনা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লেখেন, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজিত সিংহের মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক। তিনি তাঁর জীবন কৃষকদের জন্য নিবেদিত করেছিলেন।
কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী বলেন, অজিত সিংহের অসময়ে মৃত্যু দুঃখজনক। তাঁর পরিবারকে আমার সমবেদনা।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ লেখেন, অজিত সিংহ জনসেবা করেছন। জমি ও কৃষকদের জন্য লড়াই করেছেন।
রাজনৈতিক জীবনের গোড়ায় কংগ্রেস ও লোকদলের বিরোধী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন অজিত সিংহ। বিজেপি ও সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট করেন।
যদিও, সমালোচকরা তাঁকে মরশুমি বন্ধু ও সুবিধাবাদী আখ্যা দিয়েছিল। তাদের মতে, জয় নিশ্চিত করতে জোট পাল্টাতেন অজিত।
ভিপি সিংহের জমানায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন অজিত সিংহ। পরে, পিভি নরসিংহ রাও সরকারেও যোগ দেন। খাদ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কিন্তু, ১৯৯৬ সালে কংগ্রেস থেকে ইস্তফা দেন।
গঠন করেন রাষ্ট্রীয় লোক দলের। ২০০১ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সরকারে যোগ দেন। কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন। ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি এনডিএ জোটে ছিলেন।
পরে, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে ইউপিএ-তে যোগ দেন তিনি।