লখনউ: কুর্সি দখল করতে না পারলেও, এক ধাক্কায় দলের আসন দ্বিগুণেরও বেশি বাড়িয়ে ফেলেছেন। মাঠে ময়দানে সামনে থেকে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন দলকে। এমনকি জীবনে প্রথম বার বিধানসভা নির্বাচনেও নাম লিখিয়েছেন। এ বার বিরোধী দলনেতার দায়িত্বো নিজের কাঁধে তুলে নিলেন সমাজবাদী পার্টির (Samajwadi Party) প্রধান অখিলেশ যাদব (Akhilesh Yadav)। উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় (Uttar Pradesh Assembly) যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) সরকারের বিরুদ্ধে প্রধান মুখ হলেন তিনি।
একদিন আগেই দ্বিতীয় বারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন যোগী। তার পরই শনিবার এসপি নেতৃত্ব জরুরি বৈঠক করেন। সেখানেই সর্বসম্মতিতে বিরোধী দলনেতা হিসেবে অখিলেশের নামে সিলমোহর পড়ে। বৈঠক শেষে এসপি মুখপাত্র জানিয়ে দেন, বিধানসভায় বিরোধী শিবিরের হয়ে নেতৃত্ব দেবেন অখিলেশ। তার জন্য শীঘ্রই শরিক দলগুলির সঙ্গে বিশদ আলোচনায় বসবেন তিনি।
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা অখিলেশ
উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে অখিলেশ যে এ বার গুরুদায়িত্ব পালন করতে চলেছেন, চলতি সপ্তাহের শুরুতেই তার ইঙ্গিত মেলে। আজমগড়ের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে দেন অখিলেশ। দলীয় সূত্রে খবর, বিধানসভার কক্ষে দাঁড়িয়ে এ বার সরাসরি রাজ্য সরকারের মোকাবিলা করতে চান অখিলেশ, যাতে ২০২৭-এর বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের পথ আরও সুগম করে তোলা যায়।
যথেষ্ট বিবেচনা করেই অখিলেশ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদেরও। তাঁদের মতে, উত্তরপ্রদেশের মাটিতে দলের পক্ষে সমর্থন ধরে রাখা যে অত্যন্ত জরুরি, তা বিলক্ষণ বুঝেছেন অখিলেশ। তাই নিজে দিল্লিতে থেকে, দলকে স্থানীয়দের নেতাদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার ঝুঁকি আর নিতে নারাজ তিনি। একই সঙ্গে পরাজয়ের পর মুখ লুকিয়ে বাঁচছেন, এমন অভিযোগও যাতে কেউ তুলতে না পারেন, তার জন্যই এমন সিদ্ধান্ত অখিলেশের। রাজ্য রাজনীতিতে তিনি সক্রিয় নন, শুধু নির্বাচনের সময়ই দেখা যায়, এই অনুযোগও কাটিয়ে উঠতে এই পদক্ষেপ তাঁকে সাহায্য করবে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।
২০২৭-এর প্রস্তুতি এখন থেকেই
আজমগড়ের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সময় একই সুর ধরা পড়েছিল অখিলেশের গলাতেও। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে সমর্থন জানিয়ে আমাদের নৈতিক জয়ের রাস্তা মসৃণ করে তুলেছেন কোটি কোটি মানুষ। তাঁদের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাতে এই স্বার্থত্যাগ জরুরি। তবে কারহাল থেকে বিধানসভা নির্বাচনে জিতলেও, আজমগড়ের প্রতিও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমি। মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব এবং সামাজিক অবিচারের মোকাবিলা করতে এই পদক্ষেপ করা জরুরি।’’
উল্লেখ্য, কংগ্রেসের সঙ্গ ছেড়ে এ বার আঞ্চলিক দলগুলিকে একছাতার নীচে এনে নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়েন অখিলেশ। সামনে থেকে দাঁড়িয়ে নেতৃত্ব দেন দলের কর্মী-সমর্থকদের। এসপি-র ভোটবাক্সেও তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। ২০১৭ সালে যেখানে তাঁর দল মাত্র ৪৭টি আসন কোনও মতে ধরে রাখতে পেরেছিল, এ বার তা বেড়ে ১১১ হয়েছে। তাই মাটি কামড়ে থেকেই পরবর্তী লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে নেমে পড়লেন তিনি।