নয়াদিল্লি : কাশ্মীরের স্বর্গীয় দৃশ্যপট দেখে স্বয়ং মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গির বলেছিলেন, পৃথিবীতে কোথাও স্বর্গ থাকলে সেটা কাশ্মীরে। ২০১৯ সালে বিজেপি কেন্দ্রে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরই জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল।  ৫ অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা তুলে নেয় মোদি সরকার।  একই সঙ্গে  কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত হয় জম্মু-কাশ্মীর। সেই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের প্রায় দু’বছর পর অমিত শাহ উপত্যকায় যাচ্ছেন। 


এবার কাশ্মীর উপত্যকা থেকে সরাসরি বিদেশ যাত্রা। আজ তিনদিনের সফরে জম্মু কাশ্মীরে পৌঁছেছেন অমিত শাহ। শ্রীনগর থেকে শারজাগামী আন্তর্জাতিক উড়ানের উদ্বোধন করবেন তিনি।

২০১৯-এর অগাস্টে ৩৭০ ধারা রদের পর এই প্রথম জম্মু কাশ্মীরে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এরপর জম্মু-কাশ্মীরের প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করবেন তিনি। নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে সূত্রের খবর। 

ANI সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ' অমিত শাহ শনিবার শ্রীনগরে নিরাপত্তা ও উন্নয়ন-সম্পর্কিত প্রকল্পগুলি পর্যালোচনা করবেন । তিনি সম্ভবত রবিবার জম্মুতে একটি জনসভা করবেন। ' জানিয়েছেন এক পুলিশ আধিকারিক। 


শ্রীনগরে নিরাপত্তা পর্যালোচনা সভা ছাড়াও, তিনি জম্মু ও কাশ্মীরের যুব ক্লাবগুলির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলবেন ।   শ্রীনগর এবং শারজার মধ্যে প্রথম আন্তর্জাতিক বিমানে উদ্বোধন করবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জম্মু ও কাশ্মীর সফরের আগে, শ্রীনগরে বেশ কয়েকটি জায়গায় যানবাহনের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। দু-চাকার গাড়ির চালকদেরও সব আইনি কাগজপত্র খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নিরাপত্তা বেষ্টনী যথেষ্ট দৃঢ় ।  অমিত শাহর সফর ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে ৫০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী।


৩৭০ ধারা ভারতীয় সংবিধানের একটি অস্থায়ী সংস্থান বা টেম্পোরারি প্রভিশন। এই ৩৭০ ধারা বলেই জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছিল। ২০১৯ সালের ৫ অগাস্টের পর বিশেষ মর্যাদা হারানোর পর প্রতিরক্ষা, বিদেশ, যোগাযোগ ছাড়া অন্য ক্ষেত্রেও আইন প্রয়োগ করতে পারে কেন্দ্র। সংবিধানের ৩৭০ ধারায় জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের জন্য তার আগে আলাদা আইন ছিল। জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দারা এখন ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় পড়েন। সংবিধানের ৩৭০ ধারায় এতদিন জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দারা দু’টি নাগরিকত্বের বিশেষ সুবিধা পেতেন। বাসিন্দারা আর দু’টি নাগরিকত্বের বিশেষ সুবিধা পান না। পাশাপাশি বিশেষ মর্যাদা হারানোর পর জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভার মেয়াদ ৬ বছর থেকে কমে হয় ৫ বছর।