নয়াদিল্লি: দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে থানায় (Police Station)। প্রাণ বাঁচাতে পালিয়েছে পুলিশ। আগুনের গ্রাসে থানা চত্বরে থাকা একাধিক মোটরবাইক। সংবাদ সংস্থা পিটিআই (PTI)-এর খবর সূত্রে সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে অসমের নওগাঁতে (Nagaon)। শনিবার নওগাঁর বতাদ্রভা থানায় (Batadrava Police Station) আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে উত্তেজিত জনতার বিরুদ্ধে। পুলিশি হেফাজতে এক ব্যক্তির মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে ছড়ায় উত্তেজনা। তারপরেই এমন ঘটনা।
ওই ঘটনায় মুখ খুলেছেন অসমের (Assam) পুলিশ প্রধান ভাস্কর জ্যোতি মহন্ত (DGP Bhaskar Jyoti Mahanta)। তাঁর দফতরের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে রবিবার।
সেখানে বলা হয়েছে
'সফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে বতাদ্রভা থানায় আনা হয়েছিল। ২০মে রাত সাড়ে নটা নাগাদ তাঁকে আনা হয়। অভিযোগ ছিল ওই ব্যক্তি মদ্যপ ছিলেন। রাস্তায় শুয়ে ছিলেন তিনি, সেখান থেকে তাঁকে উঠিয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়। শারীরিক পরীক্ষার (medical check up) পর তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। পরদিন তাঁকে তাঁর স্ত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাঁর স্ত্রী তাঁকে জল বা খাবার দিয়েছিলেন। তারপরে ওই ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তারপর তাঁকে পরপর দুটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনা আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। বতদ্রভা থানায় ওসি সাসপেনশনে পাঠানো হয়েছে। বাকি কর্মীদের ক্লোজ করা হয়েছে।' অসম পুলিশ প্রধান এটাও জানিয়েছেন, ওই ঘটনায় কেউ দোষী হলে তাঁর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। একটি ফেসবুক পোস্টও করা হয়।
কী অভিযোগ:
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, ওই মাছ ব্যবসায়ীকে শুক্রবার রাতে ধরা হয়। বাসে শিবসাগরে যাওয়ার সময় তাঁকে ধরা হয়। পুলিশি হেফাজতেই তাঁর মৃত্যু (custodial death) হয়েছে বলে অভিযোগ। মৃতের পরিবারের দাবি, তাঁকে ছাড়ার জন্য দশ হাজার টাকা ও একটি হাঁস (Duck) ঘুষ (Bribe) চাওয়া হয়। তারপরের দিন সকালে একটি হাঁস নিয়ে থানায় যান ওই ব্যক্তির স্ত্রী। তারপরে যখন আবার টাকা নিয়ে যান, তখন তিনি জানতে পারেন তাঁর স্বামীকে নওগাঁ সিভিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে যাওয়ার পর তাঁকে মৃত (Dead) অবস্থায় দেখতে পান তাঁর স্ত্রী। পরিবারের দাবি এমনটাই। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুলিশের অত্যাচারেই মারা গিয়েছেন ওই ব্যক্তি। তারপরেই থানা ঘেরাও করেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের মারধরের পরেই থানায় আগুন জ্বালিয়ে দেন তাঁরা।
এই হামলা নিয়ে ডিজিপি জানিয়েছেন, তাঁরা মনে করছেন মৃতের পরিবার ও আত্মীয়রা এই হামলায় জড়িত নেই। দুষ্কৃতী এবং তাদের পরিবার এই ঘটনায় জড়িত। আগে থেকে পরিকল্পনা করে, প্রস্তুতি নিয়ে এই হামলা চালানো হয়েছে। কারণ ওই থানায় থাকা সব নথি পুড়ে গিয়েছে। ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের ধরার জন্য তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।