মুম্বই: সরকার টিকে থাকবে, না পড়বে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে (Maharashtra Political Crisis)। তার মধ্যেই কৌশলে মারাঠা আবেগ উস্কে দিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা (Shiv Sena) প্রধান উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray)। ছত্রপতি শিবাজির জ্যেষ্ঠপুত্র সম্ভাজীর সম্মানে অওরঙ্গাবাদের নাম বদল করে সম্ভাজীনগর (Sambhajinagar) করায় অনুমোদন দিল তাঁর সরকার। শিবসেনা অনুগামী তথা মহারাষ্ট্রের আদি বাসিন্দারা দীর্ঘ দিন ধরেই এই দাবি তুলে আসছিলেন। রাজনৈতিক সন্ধি ক্ষণে দাঁড়িয়ে বুধবার তাতে সিলমোহর দিল উদ্ধব সরকার। 


মারাঠা আবেগ উস্কে দেওয়ার কৌশল উদ্ধবের!


মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের (Aurangabad) নামানুসারে ওই অঞ্চলের গভর্নর ছিলেন। তাঁর নামানুসারে ওই অঞ্চলের নাম হয় ঔরঙ্গাবাদ। শিবাজির ছেলের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন ঔরঙ্গজেব। তাই ওই জায়গার নাম পাল্টে সম্ভাজীনগর রাখার সপক্ষে দীর্ঘ দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন শিব সৈনিকরা। তাতেই এ বার সিলমোহর পড়ল। একদিকে দলের বিক্ষুব্ধ নেতা একনাথ শিন্দে যখন বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন, বিজেপি-র তরফে যখন উদ্ধব সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেই সময় উদ্ধব সরকারের এই সিদ্ধান্তকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। 


শুধু অওরঙ্গাবদলের নামবদলই নয়, এ দিন আরও একাধিক নয়া নামকরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভায়। উসমানাবাদ শহরের নাম পাল্টে ধারাশিব করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই ভাবে নবী মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দলের নাম পাল্টে স্বর্গীয় ডিবি পটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের সরকার।


আরও পড়ুন: GST Council: কাটল না জট ! রাজ্যগুলিকে GST ক্ষতিপূরণ বাড়ানোর বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হল না


দীনকর বালু পাটিল ওরফে ডিবি পাটিলের জন্ম রায়গড়ে। কৃষক এবং শ্রমিক পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। কৃষক পরিবারের ছেলে পাটিল আইন পাশ করেন। কোলাবা থেকে ভোটে জেতেন। ১৯৫৭ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত পাঁচ দফায় বিধায়ক হন। ১৯৭৭ এবং ১৯৮৪ সালে কোলাবা থেকে সাংসদও নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে বিধান পরিষদের সদস্য হিসেবে জায়গা পান বিধানসভায়। মহারাষ্ট্র বিধান সময় দীর্ঘ সময় বিরোধী দলনেতার ভূমিকাও পালন করেন। ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময় গ্রেফতার হন। 


একাধিক নামকরণের সিদ্ধান্তে সায়


মহারাষ্ট্রের কৃষক আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল পাটিলের। ১৯৮৪ সালে তাঁর নেতৃত্বাধীন কৃষক আন্দোলনে চার কৃষকের মৃত্যু হয়। তার পর কৃষকদের জন্য সাড়ে ১২ শতাংশ জমি প্রকল্প আনতে বাধ্য হয় রাজ্যের সরকার। আজ পর্যন্ত তা চালু রয়েছে। জওহরলাল নেহরু বিমান বন্দর কর্তৃপক্ষ উরান এলাকায় জমি অধিগ্রহণ করতে এলে পাটিলের নেতৃত্বে আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে। অসুস্থ অবস্থায় ৮৬ বছর বয়সি পাটিল সেই সময় অ্যাম্বুল্যান্সে বসে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ২০১২ সালে মৃত্যু হয় তাঁর। তাই দীর্ঘ দিন ধরে পাটিলের নামে বিমানবন্দরের নামকরণের দাবি তুলে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রাজনৈতিক সঙ্কট যখন চরমে, সেই সময় সেই দাবি মেনে নিল উদ্ধব সরকার।