নয়া দিল্লি : সেনার উর্দি গায়ে চাপিয়েই কেটেছে জীবনের চার দশক। ইহজীবনের সমাপ্তিও ঘটল সেনার মর্যাদাতেই। শুক্রবার পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হল দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক জেনারেল বিপিন রাওয়াতের (CDS Bipin Rawat)। ১৭ টি (17 Gun Salute) তোপধ্বনিতে তাঁকে বিদায় জানাল গোটা দেশ। শেষকৃত্য সম্পন্ন হল দুই মেয়ের হাতেই।


বুধবার তামিলনাড়ুতে হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে (Tamil Nadu Helicopter Crash) মৃত্যু হয় জেনারেল রাওয়াত, তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত (Madhulika Rawat) এবং ১১ জন সেনাকর্মীর। শুক্রবার দিল্লি ক্যান্টনমেন্টের ব্রার স্কোয়্যার শ্মশানে একসঙ্গেই শেষকৃত্য সারা হল রাওয়াত দম্পতির। সেখানে ১৭টি তোপধ্বনিতে শ্রদ্ধা জানানো হয় তাঁদের। আর তাতেই প্রশ্ন উঠছে, ২১টির (21 Gun Salute) পরিবর্তে ১৭টি তোপধ্বনি কেন ?


সম্মানীয় ব্যক্তির মৃত্যুতে সেনাবাহিনীর কামান থেকে তোপ দেগে সেলাম জানানোর প্রথা আসলে ব্রিটেনের। পরবর্তী কালে ভারত-সহ কমনওয়েলথ দেশগুলি এই প্রথা আপন করে নেয়। ভারতে সাধারণত রাষ্ট্রপতি, প্রশাসনিক প্রধান এবং বর্ষীয়ান রাজনীতিকদের মৃত্যুতে ২১ তোপের সেলাম বা তোপধ্বনি জানানো হয়। সেনা, নৌসেনা এবং বায়ুসেনা প্রধানদের শ্রদ্ধা জানানো হয় ১৭টি তোপধ্বনিতে।


এপ্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বিদেশি রাষ্ট্রনেতা অথবা রাজনীতিকদের আগমনে সাধারণত ১৯টি তোপধ্বনিতে ‘গার্ড অফ অনার’ দেওয়া হয়। মার্চ মাসে বাংলাদেশ সফরে গিয়ে এই সম্মান পান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।


রাজনীতি, আইনব্যবস্থা, বিজ্ঞান, শিল্পকলার সঙ্গে যুক্ত বিশিষ্ট ব্যক্তিদেরই সাধারণত তোপধ্বনি দেওয়া হয়। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্যের ক্ষেত্রে গান স্যালুট, পতাকা অর্ধনমিত রাখা, শোকপালন দিবস এবং ছুটি ঘোষণার নিয়ম রয়েছে। শুধু শেষকৃত্যের সময়ই নয়, তোপধ্বনির প্রথা রয়েছে প্রজাতন্ত্র দিবস, স্বাধীনতা দিবস উদযাপনেও। যুদ্ধকালীন সময়ে দেশের জন্য অবদান থাকা সেনানায়কদেরও গান স্যালুট দেওয়া হয়।


একইভাবে, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, কেন্দ্রীয়মন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীদের। প্রশাসনিক পদে না থাকলেও, মহাত্মা গাঁধীর শেষকৃত্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হয়েছিল। মাদার টেরেসা, বাল ঠাকরে, সর্বজিৎ সিংহ, হিন্দুস্তানি সঙ্গীত শিল্পী গাঙ্গুবাঈ হাঙ্গল, পণ্ডিত ভীমসেন জোশী, প্রবীণতম সেনানায়ক অর্জন সিং, পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত অভিনেত্রী শ্রীদেবী এবং প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা দিলীপ কুমারের শেষকৃত্যও সম্পন্ন হয় রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়।