নয়াদিল্লি : একদিকে দেশজুড়ে ভ্যাকসিনের আকাল। অন্যদিকে করোনার টিকা নিয়েই কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্যের সংঘাত ক্রমশ চরমে উঠছে। এদিন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলার অভিযোগ তুলেছেন। সাংবাদিক সম্মেলনে রীতিমতো হাতে সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে বসে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া বলেছেন, 'মিথ্যে কথা বলছে বিজেপি। তারা দাবি করছে দিল্লি সরকার সাড়ে ৫ লক্ষ ভ্যাকসিন চেয়ে পাঠিয়েছিল। যা মিথ্যে। আমরা ১.৩৪ কোটি ভ্যাকসিন চেয়েছিলাম।'


এদিকে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, দিল্লিবাসীকে দেওয়ার জন্য আর মাত্র ৩-৪ দিনের মতো ভ্যাকসিন আপাতত রয়েছে তাদের হাতে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুরোধ করব যাতে তারা বেশি সংখ্যায় ভ্যাকসিন বরাতের বন্দোবস্ত করেন।


মুখ্যমন্ত্রীর যে বক্তব্যের আগে সাংবাদিক সম্মেলনে একাধিক কাগজ দেখিয়ে দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২ এপ্রিল কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত জানায় যে টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর থেকে সরাসরি রাজ্যগুলো ভ্যাকসিন কিনতে পারবে। যার পরই ১৮ বছরের ঊর্ধ্ব সকলকে টিকা দেওয়ার কথা মাথায় রেখে ১.৩৪ কোটি ভ্যাকসিন কেনার বরাত দিই আমরা। যার পরে টিকাপ্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির থেকে কোনও উত্তর মেলেনি। আর কেন্দ্রীয় সরকার জানায়, মে মাসে দিল্লিকে ৯২ হাজার ৮৪০টি কোভ্যাকসিনের ডোজ ও ২ লক্ষ ৬৭ হাজার ৮৪০টি কোভিশিল্ডের ডোজ দেওয়া যাবে। আর বিজেপি এখন বলছে আমরা সাড়ে ৫ লাখ ভ্যাকসিনের বরাত দিয়েছিলাম। যা সম্পূর্ণ মিথ্যে।


হাতের চিঠি দেখিয়ে মনীশ সিসোদিয়ার অভিযোগ, বাইরের দেশকে ভ্যাকসিন বিক্রি করতে গিয়ে রাজ্যগুলিকে কম ভ্যাকসিন দিয়েছে কেন্দ্র। যখন নিজের দেশবাসী মারা যাচ্ছেন, তখন বাইরের দেশে ৬.৫ কোটি ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়েছে কিসের লোভে?


করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে গোটা দেশে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া স্থানগুলির মধ্য়ে অন্যতম দিল্লি। এবারের দ্বিতীয় ঢেউয়ে রাজধানীজুড়ে হওয়া প্রলয় থেকে এখন থেকেই তারা আগামীদিনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এবারে দিল্লিতে দৈনিক সংক্রমণ সর্বোচ্চ পৌঁছেছিল ২৮ হাজারে। সেই থেকে শিক্ষা নিয়ে যাতে দৈনিক ৩০ হাজার করোনা সংক্রমিতকে চিকিৎসা দেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে পরিকাঠামো গঠনের কাজ তারা শুরু করছেন বলেই জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী।