নয়াদিল্লি: বিধানসভা নির্বাচনের আগে একাধিক রাজ্যে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে পারদ চড়ছে। সেই আবহেই বড় ঘোষণা কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের। তারা জানিয়েছে, ২০২৫ সালের আগে ধর্মীয় উৎপীড়নের কারা যে সমস্ত হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী মানুষ পড়শি দেশ বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে যাঁরা ভারতে চলে এসেছেন, তাঁরা পাসপোর্ট, ভিসা এবং অন্যান্য নথি ছাড়াই ভারতে থাকতে পারবেন। কোনও কাগজই দেখাতে হবে না তাঁদের। (CAA New Rule)

এবছরই সংসদের বাজেট অধিবেশনে অভিবাসী এবং বিদেশি বিল এনেছিল কেন্দ্র। এবার সেই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। কী করে নীতি নিয়ম কার্যকর করা হবে, তা জানানো হয়েছে।  ১ সেপ্টেম্বরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিদেশিরা এলে কী কী করতে পারবেন, তাঁদের ভিসা দেওয়া হবে কী উপায়ে, ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও থেকে যাচ্ছেন, তাঁদের কী করে শনাক্ত করা হবে, কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নিয়ে নির্দেশিকা এসেছে।

পাশাপাশি, কোনও কারণ ছাড়াই ভারতে চলে আসছেন যাঁরা, কোনও কাগজ ছাড়াই যাঁরা সীমান্ত টপকে ভারতে প্রবেশ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তার নির্দেশিকাও রয়েছে। বলা হয়েছে, সন্দেহভাজনদের হোল্ডিং এলাকায় রেখে ফরেনার্স ট্রাইবুনালে শুাননি হবে। নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে তাঁদের।

কেন্দ্র আরও জানিয়েছে, যাঁরা ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এসেছেন, তাঁরাও ভারতে থাকতে পারবেন। ভারতের যে কোনও জায়গায় থাকতে পারবেন, কাজও করতে পারবেন তাঁরা।  ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে দেশের সংসদে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল পাস হয়। তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সই করার পর সেটি আইনে পরিণত হয় সরকারি ভাবে। এর আওতায় পড়শি দেশের অমুসলিম নাগরিক, ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে যাঁরা ভারতে প্রবেশ করেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়। গত বছর আইন কার্যকর হয় শেষ পর্যন্ত। সেই সময় ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ভারতে চলে আসা অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা ছিল। সেই নিয়মই বহাল রয়েছে। নয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যে অমুসলিমরা ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এসেছেন, তাঁরা ভারতে থাকতে পারবেন। ভারতের যে কোনও জায়গায় থাকতে পারবেন, কাজও করতে পারবেন তাঁরা।(CAA Rules Changed)

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের তরফে জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, 'আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানে বসবাসকারী সংখ্যালঘু হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, খ্রিস্টান, যাঁরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে যাঁরা এদেশে প্রবেশ করেছেন, যাঁদের কাছে বৈধ কাগজপত্র ছিল না, পাসপোর্ট বা অন্য প্রয়োজনীয় নথি ছিল না, বা থাকলেও মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, তাঁদের ছাড় দেওয়া হল। বৈধক পাসপোর্ট, ভিসা দেখানোর নীতি কার্যকর হবে না তাঁদের ক্ষেত্রে'।

কেন্দ্রের এই বিজ্ঞপ্তি সামনে আসার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় ধন্যবাদ বার্তা পোস্ট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, যিনি ঠাকুরনগরের মতুয়া বাড়ির সদস্য এবং মতুয়াদের প্রতিনিধিও। তিনি লেখেন, 'CAA-তে আবেদনের জন্য ভারতে প্রবেশের সময়সীমা বাড়িয়ে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহজি-কে অনেক অনেক ধন্যবাদ'। 
 
বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রের প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারও কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, 'বাংলাদেশ থেকে আগত হিন্দু উদ্বাস্তুদের মুক্তি দিল ভারত সরকার। জলদি ভারতের নাগরিকত্ব আইনে আবেদন জানিয়ে দেশের নাগরিক হতে পারবেন তাঁরা'। মোদি-শাহকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনিও।