নয়া দিল্লি : ২০১৮ সালে পুরনো সহপাঠীদের সঙ্গে একটা গেট-টুগেদারের পরিকল্পনা করেছিলেন । কিন্তু, পেশাগত কারণে নিজেই তাতে যোগ দিতে পারেননি চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াত। ব্রিটিশ আমলের স্কুলে কাটানো পুরনো সেইসব স্মৃতিমেদুর দিনগুলিকে পুনরায় একবার বাঁচিয়ে তোলার জন্য এক জায়গায় জড়ো হওয়ার পরিকল্পনা করেছিল ১৯৭৩ সালের এই ব্যাচটি।


বিপিন রাওয়াতের স্কুলের বন্ধু ও শৈশবের সঙ্গী ব্রিজ মোহন চৌহান। যিনি ১৯৭৩ সালে সিনিয়র কেমব্রিজ ক্লাস(বর্তমানে একাদশ শ্রেণি) সম্পন্ন করেছিলেন। বন্ধুকে স্মরণ করে তিনি বললেন, ও খুবই সাদাসিধে ও মেধাবী ছিল। ১৯৭১-১৯৭৩ সালে সেন্ট এডওয়ার্ড স্কুলে পড়াশোনা করেছেন জেনারেল রাওয়াত।


সেনায় সিনিয়র পোস্ট পাওয়ার পর জেনারেল রাওয়াতের স্ত্রী মধুলিকাকেও ১৯৭৩-এর হোয়াটসঅ্যাপ ব্যাচে অ্যাড করা হয়। তিনিই বন্ধুদের আপডেট দিতেন। 


জেনারেল রাওয়াতকে স্মরণ করেছেন ঐতিহাসিক রাজা বাসিনও। তাঁরা একসঙ্গে সিমলা 'হেরিটেজ ওয়াক' করেন। স্মৃতিচারণায় ঐতিহাসিক বাসিন বলেছেন, জেনারেল রাওয়াতের সিমলা ও এখানকার ঐতিহ্যবাহী বিল্ডিংগুলির ইতিহাস সম্বন্ধে আগ্রহ ছিল। ২০১৯ সালে উনি, ওঁর স্ত্রী এবং আমি - একসঙ্গে শহর দিয়ে দুই ঘণ্টা হেঁটেছিলাম। উনি একদম মাটির মানুষ ছিলেন। সিমলার সবকিছু সম্বন্ধে আগ্রহ ছিল।  


দুই বছর আগে জেনারেল রাওয়াত যখন সিমলায় গিয়েছিলেন, সেই সময় নিরাপত্তাজনিত কারণে তাঁর সঙ্গে চেষ্টা করেও দেখা করতে পারেননি চৌহান ও তাঁর বন্ধুরা।


গতকাল তামিলনাড়ুর কুন্নুরে হেলিকপ্টার ভেঙে মৃত্যু হয় দেশের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াতের। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় জেনারেল রাওয়াতের স্ত্রী মধুলিকারও। কপ্টারের ১৪ জন যাত্রীর মধ্যে ১৩ জনেরই মৃত্যু হয়। তাঁদেরই একজন চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী হাবিলদার সৎপাল রাই। তিনি দার্জিলিঙের তাকদার বাসিন্দা। 


গতকালের এই দুর্ঘটনায় বিপিন রাওয়াত, তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত ছাড়াও প্রাণ হারান ব্রিগেডিয়ার এলএস লিড্ডা, লেফটেন্যান্ট কর্নেল হরজিন্দর সিং, নায়েক গুরসেবক সিং, নায়েক জিতেন্দ্র কুমার, ল্যান্সনায়েক বিবেক কুমার, ল্যান্সনায়েক বি সাই তেজা, হাবিলদার সৎপাল রাই। হেলিকপ্টারটি চালাচ্ছিলেন উইং কমান্ডার পৃথ্বী সিংহ চৌহান।