নয়াদিল্লি: দেশে কয়লা সঙ্কট বড় আকার ধারণ করেছে। সূত্রে খবর, দেশে তাপবিদ্য়ুৎ কেন্দ্রগুলিতে মাত্র ৪ দিন বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো কয়লা মজুত রয়েছে।


এই পরিস্থিতিতে দেশে একের পর এক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে, দেশে বড়সড় বিদ্যুৎ বিপর্যয় আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে একাধিক রাজ্য। যদিও, কেন্দ্রের আশ্বাস কোনও ঘাটতি নেই। দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত কয়লার মজুদ রয়েছে। 


সূত্রের খবর, সাম্প্রতিককালে দেশে উদ্ভুত কয়লার জোগানে সঙ্কটের জেরে এখনও পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ২০টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে পাঞ্জাবে তিনটি, কেরলে চারটি এবং মহারাষ্ট্রে ১৩টি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে।


কর্ণাটক ও পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী কয়লার সরবরাহ বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে, দেশে কয়লার ঘাটতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছে কংগ্রস। তাদের আশঙ্কা, পেট্রোলের দাম বৃদ্ধির পর এখন বিদ্যুতের হার বাড়ানো হতে পারে।


দেশে ১৩৫টি কেন্দ্র থেকে মোট তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এর অর্ধেকের বেশি জায়গায় ৩-৪ দিনের বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের মতো কয়লা মজুত নেই।


এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, যদি কেন্দ্রীয় সরকার বিদ্যুৎকেন্দ্রে কয়লার ঘাটতি দ্রুত সমাধান না করে তবে দিল্লি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হতে পারে। তিনি সঙ্কট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ আহ্বন করেন।


এই পরিস্থিতিতে, কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী আর কে সিংহ রবিবার সমস্ত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লার মজুদ অবস্থা পর্যালোচনা করেছেন। এরপর বিদ্যুৎমন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতি দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে, ভারতে বিদ্যুৎ সঙ্কটের আশঙ্কা অতিরঞ্জিত। কয়লা মন্ত্রক বলেছে, "চাহিদা মেটাতে দেশে পর্যাপ্ত কয়লা মজুত রয়েছে। 


আর কে সিংহ বলেন, কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী আর কে সিংহ বলেছেন, কয়লার ঘাটতি নিয়ে অহেতুক আতঙ্ক তৈরি করা হয়েছে। এটি গেইল এবং টাটার ভুল যোগাযোগের কারণে হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ আছে। আমরা সারা দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছি। যাদের চাহিদা রয়েছে, আমাকে তারা অনুরোধ করুক। আমি তেমন সরবরাহ করব।"


তিনি যোগ করেন, বর্ষাকালে খনিগুলি প্লাবিত হওয়ায় নিয়মিত কাজ ব্যাহত হয়। তার ওপর কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ক্রমবর্ধমান অর্থনীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদাও। সেই জন্য সাময়িক সঙ্কট তৈরি হয়েছে।


যদিও, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দাবিকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় তৈরি হওয়া অক্সিজেন সঙ্কটের সঙ্গে তুলনা টেনেছেন দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়া। তিনি বলেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় রাজধানীতে অক্সিজেন ঘাটতির ক্ষেত্রেও একই কথা বলা হয়েছিল।


ঘাটতির ফলে প্রতিদিন পঞ্জাবে দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে। বিহার, রাজস্থান এবং ঝাড়খণ্ডে দিনে ১৪-ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকছে বলে খবর।