ভোপাল: বিহার, উত্তরপ্রদেশের পর এবার মধ্যপ্রদেশ। পান্না জেলার রুঞ্জ নদীতে ভাসছে ৬টির বেশি মৃতদেহ। করোনায় মৃত্যুর পর দেহ সৎকার না করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের। 


মধ্যপ্রদেশের পান্না জেলার নন্দনপুর গ্রামে উত্তরপ্রদেশ লাগোয়া। ফলে সেখান থেকে দেহগুলি ভেসে এসেছে কি না, তা নিয়েও সংশয় রয়েছে। ৩-৪ দিন নদীতে মৃতদেহ ভাসলেও প্রশাসনের হেলদোল নেই বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। 


কয়েকদিন আগেই, উত্তরপ্রদেশ ও বিহারে গঙ্গার পাড় ধরে সার দিয়ে অসংখ্য পচাগলা দেহ পড়ে থাকার দৃশ্য দেখেছে দেশবাসী। 
বিহারের বক্সার ও উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে গঙ্গার পাড়ে শতাধিক দেহের স্তূপের দেখা মেলে। মৃতদেহের চারপাশে উড়ে বেড়াচ্ছে কাক। বীভত্‍সতা এমন জায়গায় যে, এই ছবি দেখানো তো দূরের কথা, ভাষাতেও প্রকাশ করা যায় না।


বিহার, উত্তরপ্রদেশের বহু করোনা রোগীর দেহ সত্‍কার না করে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর জেরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সূত্রের খবর, গহমেড় এলাকায় প্রায় ১ কিলোমিটারের মধ্যে গঙ্গায় প্রায় ১০০টি দেহ ভেসে এসেছে। 


সোমবারই বিহারের বক্সারে গঙ্গায় মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়। কোনওটা আধপোড়া, কোনও দেহে পচন ধরেছে। এমনকী, অ্যাম্বুল্যান্স থেকে দেহ নামিয়ে সৎকার নয়, ছুঁড়ে নদীতে ফেলার ভাইরাল ছবিও সামনে আসে।


এরপরই মঙ্গলবার গঙ্গার অপর পাড়ে, উত্তরপ্রদেশের বালিয়াতেও একই ছবি সামনে আসে। গঙ্গায় ভাসতে দেখা যায় একাধিক মৃতদেহ।  পরে, প্রশাসনের তরফে দেহগুলিতে জল থেকে তুলে মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়। 


উত্তরপ্রদেশের হামিরপুরেও গত কয়েকদিনে এভাবেই যমুনায় একের পর এক লাশ ভাসতে দেখা দেয়। বিজেপি জোট শাসিত বিহার ও যোগী রাজ্য উত্তরপ্রদেশ থেকে এই ভয়ঙ্কর ছবি সামনে আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।


মোদি সরকারকে আক্রমণ করে, ট্যুইটে রাহুল গাঁধী বলেছেন, অসংখ্য মৃতদেহ নদীতে ভাসছে। হাসপাতালের সামনে লম্বা লাইন। জীবনের অধিকার ও নিরাপত্তা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী রঙিন চশমা না খুললে সেন্ট্রাল ভিস্তা ছাড়া অন্য কিছু দেখতে পাবেন না।


পাল্টা গোটা ঘটনার দায় রাজ্য সরকারগুলির ওপর চাপিয়ে, কেন্দ্রীয় জলশক্তি উন্নয়নমন্ত্রী ট্যুইট করে বলেছেন, বিহারের বক্সারে গঙ্গায় মৃতদেহ ভেসে আসার ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। এই ঘটনা নিয়ে অবশ্যই তদন্ত করা উচিত। মোদি সরকার ‘মা গঙ্গা’কে পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়ে দায়বদ্ধ। এই ঘটনা প্রত্যশিত নয়। সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির উচিত দ্রুত পদক্ষেপ করা।