নয়াদিল্লি : দেশে ক্রমশ ভয়ঙ্কর চেহারা নিচ্ছে করোনা পরিস্থিতি। তুঙ্গে হাসপাতালে বেডের অভাব থেকে অক্সিজেনের চাহিদা। এর মাঝে কিছুদিন আগেই ১ মে থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সের সবাইকে করোনার টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পরিস্থিতিতে সামনে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। আরটিআই-র এক প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় সরকার যে উত্তর দিয়েছে, তাতে প্রকাশ বিশ্বের অন্তত ৪৭ দেশকে ভারতের ভ্যাকসিনের দামের থেকে কম টাকায় টিকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।


তথ্য জানার অধিকারে নাগপুরের এক আইনজীবীর প্রশ্নের উত্তরে বিদেশমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কোভ্যাক্স নীতির অধীনে সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রত্যেক টিকা ২০০ টাকা ও জিএসটি এবং ভারত বায়োটেকের প্রত্যেকটি টিকা ২৯৫ টাকা ও জিএসটি-র দরে দেওয়া হয়েছে। আর যারপরই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কারণ, সিরামের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কেন্দ্রকে ১৫০ টাকাতে টিকা দিলেও বিভিন্ন রাজ্য সরকারকে তাদের থেকে ভ্যাকসিন কিনতে হবে ৪০০ টাকায়। প্রাইভেট হাসপাতালে ৬০০ টাকায় তারা ভ্যাকসিন বিক্রি করবে বলে জানায়। আর ভারত বায়োটেক জানায়, সরকারিতে ৬০০ টাকা ও বেসরকারিতে ১২০০ টাকায় ভ্যাকসিন দেবে তারা।


কেন্দ্রীয় সরকার আরটিআই-র উত্তরে জানিয়েছে, দেশে এখনও পর্যন্ত ১৪.৫৩ কোটিকে প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজের করোনার টিকা দেওয়া হয়েছে। আর ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বের মোট ৮৯টি দেশে ৬.৩৭ কোটি ভ্যাকসিন সরবার করা হয়েছে ভারত থেকে। যার মধ্যে ১.০৩ কোটি ডোজ দেওয়া হয়েছে ২০০ টাকা ও জিএসটি-র দরে। আর ৩.৪৪ কোটি ডোজ দেওয়া হয়েছে বাণিজ্যিক দরে। বাংলাদেশ, মায়ানমার, নেপাল, ডমিনিকার মতো দেশে ভারতে বর্তমানে করোনা ভ্যাকসিনের যা দাম তার থেকে কম টাকায় টিকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।


এই পরিস্থিতিতে একদিকে ১ মে থেকে যেমন গোটা দেশে বৃহৎ পরিসরে টিকাকরণের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনের আকাল হতে পারে বলেই আশঙ্কা চিকিৎসকমহলে। অন্যদিকে, সাধারণ মানুষকে ভাবাচ্ছে ভ্যাকসিনের দাম। বেশ কিছু রাজ্য অবস্য ইতিমধ্যে তাদের রাজ্যের নাগরিকদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলেছে। এদিকে, দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টও করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের ভূমিকা প্রসঙ্গে দায়ের হওয়া মামলার পর্যবেক্ষণে প্রশ্ন তুলেছে ভ্যাকসিনের মূল্য নিয়ে। কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকাকে কার্যত কাঠগড়ায় তুলে তাদের কাছে তারা সুষ্পষ্ট উত্তর চেয়েছে ভ্যাকসিনের মূল্যের প্রশ্নে। তার মাঝে সামনে আসা আরটিআই কেন্দ্রীয় সরকারের অস্বস্তি কিছুটা বাড়াল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।