Cyclone Biparjoy: গুজরাত উপকূলে (Gujrat Coast) আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় (Cyclone Biparjoy)। । মৌসম ভবন জানিয়েছে, ল্যান্ডফল (Landfall) প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে এবং তা চলবে মাঝরাত পর্যন্ত। ভারী বৃষ্টি শুরু হয়েছে গুজরাতের কচ্ছ এবং সৌরাষ্ট্র উপকূলে। বইছে তীব্র ঝোড়ো হাওয়া। আরব সাগরে তৈরি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড় যে গুজরাত উপকূলে ধ্বংসলীলা চালাবে সেই প্রসঙ্গে আগেই সতর্ক করেছিল আবহাওয়া দফতর। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধে ৬টা ৩০মিনিট নাগাদ গুজরাত উপকূলে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। ল্যান্ডফলের সময় হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার। মৌসম ভবন জানিয়েছে, যত স্থলভাগের দিকে ঘূর্ণিঝড় অগ্রসর হবে ততই বাড়বে হাওয়ার গতিবেগ। ঘণ্টায় ১২৫ থেকে ১৫০ কিলোমিটার গতিবেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। ২০২১ সালে গুজরাতে আছড়ে পড়েছিল Tauktae। তার দু'বছরের মাথায় এবার গুজরাত উপকূলে তাণ্ডবলীলা চালাতে হাজির অতি সক্রিয় ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। 


ইতিমধ্যেই গুজরাত উপকূলে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের জেরে তীব্র বেগে হাওয়া বইছে। সেই সঙ্গে চলছে বৃষ্টি। প্রভূত সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে এখনও কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। আইএমডি জানিয়েছে, দ্বারকা থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। অন্যদিকে জাখাউ বন্দর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়। গুজরাতের মাণ্ডবী এবং পাকিস্তানের করাচির মধ্যে প্রায় ৩২৫ কিলোমিটার বিস্তৃত রয়েছে উপকূল। এই গোটা এলাকা জুড়েই আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়। 


ভারতের ভূখণ্ডে শুধু গুজরাত নয়, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের প্রভাব পড়বে রাজস্থানের দক্ষিণভাগেও। এমনটাই জানিয়েছেন এনডিআরএফ-এর আইজি নরেন্দ্র সিং বুন্দেলা। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলত জানিয়েছেন সমস্ত রকম পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য তৈরি রয়েছে রাজ্য। গুজরাতের রাজ্যে দ্বারকাতেও মারাত্মক প্রভাব পড়েছে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের। উপড়ে গিয়েছে গাছ। ভেঙে পড়েছে হোর্ডিং। দ্বারকাতেও চলছে প্রবল ঝড়বৃষ্টি। 


১৬ জুন পর্যন্ত গুজরাতে বাণিজ্যিক বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। ঘূর্ণিঝড় পরিস্থিতির উপর কড়া নজর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে যাতে কোনওরকম প্রাণহানি না হয় তার জন্য আগেভাগেই সতর্ক প্রশাসন। নীচু এলাকা থেকে প্রায় ১ লক্ষ বাসিন্দাকে সরানো হয়েছে। নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে উপকূলের বাসিন্দাদের। ঘূর্ণিঝড় বিপযর্য়ের প্রভাবে মুম্বইয়ের সমুদ্রও বিক্ষুব্ধ। প্রবল জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে সেখানে। শুধু বিপর্যয় নয়। একাধিক ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়েছে ভারতের একাধিক উপকূলে। প্রতিবছরই কোনও না কোনও ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকূটি দেখা যায় পূর্ব বা পশ্চিম উপকূলে। মূলত বঙ্গোপসাগরেরই একাধিক ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটেওরোলজির তরফে একটি রিপোর্টে জানা যায় আরব সাগরের তুলনায় বঙ্গোপসাগরে তুলনায় বেশি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়। আরব সাগর তুলনায় অনেকটাই শান্ত। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই ছবিটাও বদলে গিয়েছে। বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা ক্রমশ বাড়ছে। একই চিত্র আরব সাগরেরও। ফলে এখন এখানেও প্রায়শই ঘূর্ণিঝড় তৈরি হচ্ছে। 


আরও পড়ূন- উজ্জ্বল ত্বকের রহস্য লুকিয়ে রয়েছে ভিটামিন কে-এর মধ্যে, কী কী খাবার খেতে পারেন?