নয়াদিল্লি : ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের সতর্কবার্তায় প্রচার-প্রসারে আধিকারিকদের স্থানীয় ভাষায় জোর দিতে বলার পাশাপাশি নিজেও সেই পথে হাঁটলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রবিবার ঘূর্ণিঝড় ইয়াস সামলানোর প্রস্তুতি বৈঠকে ঠিক কী কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে ইংরেজির পাশাপাশি ওড়িয়া ও বাংলাতেও ট্যুইট করেন তিনি। যেখানে তিনি লেখেন, 'সকলের নিরাপত্তা ও কল্যাণ কামনা করি'।


এদিন বিভিন্ন সিনিয়র সরকারি আধিকারিক, ন্যাশনাল ডিসাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি, টেলিকম বিদ্যুৎ প্রভৃতি মন্ত্রকের সচিবদরে সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যে বৈঠকের পর ট্যুইটারে প্রধানমন্ত্রী লেখেন, 'ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের ফলে সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। প্রভাবিত এলাকার বাসিন্দাদের সাহায্য করার জন্য কি কি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা জানানো হয়েছে।' যে বক্তব্যের সঙ্গে বৈঠকের আলোচিত বিষয় ও পদক্ষেপের তালিকাও জোড়েন তিনি।


তার পরের দুটি ট্যুইটে প্রধানমন্ত্রীর সংযোজন, 'নিরাপদ জায়গায় মানুষকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যাওয়া, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে বিঘ্নিত না হয় তা নিশ্চিত করার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সংশ্লিষ্ট এলাকার কোভিড-১৯ এ সংক্রমিতদের চিকিৎসায় যাতে ব্যাঘাত না ঘটে, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।' এবং সবশেষে তিনি লেখেন, 'সকলের নিরাপত্তা ও কল্যাণ কামনা করি ।'



প্রধানমন্ত্রীর তরফে সমস্ত সিনিয়র আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে রাজ্যগুলির সঙ্গে প্রয়োজনীয় সম্বন্নয় রেখে কাজ চালানো হয়। যে সমস্ত এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আছড়ে পড়ার আশঙ্কা বেশি, সেখানকার বাসিন্দাদের যাতে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সমুদ্র উপকূলবর্তী সমস্ত কাজকর্ম যাতে স্তব্ধ থাকে, সেটা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও বার্তা দিয়েছেন তিনি।


টেলিকম, বিদ্যুৎ বিভাগের সচিবদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, যাতে ঘূর্ণিঝড় কবলিত এলাকাগুলিতে দ্রুত টেলি-যোগাযোগ থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ ফিরে আসে সেটা সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রেও দায়িত্ব নিতে হবে। এক্ষেত্রেও রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে বাড়তি সম্বন্নয় রক্ষা করে কাজ চালানোর বার্তা দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি। কোভিড চিকিৎসাও যাতে প্রভাবিত না হয় সেটা নিশ্চিত করার বার্তাও সব পক্ষকে দিয়েছেন তিনি।


৪৬ টি এনডিআরএফ দল মোতায়েন করা হয়েছে। আজই বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন শুরু করেছে ১৩টি দল। উদ্ধার কাজের জন্য মোতায়েন করা হয়েছে ভারতীয় উপকূলরক্ষী ও ভারতীয় নৌবাহিনীকে। হেলিকপ্টার এবং জাহাজ নিয়ে তাঁরা প্রস্তুতি নিয়েছে।  যাঁরা সমুদ্রে গিয়েছেন তাঁদের ফিরিয়ে আনার জন্য অফিসারদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।


উল্লেখ্য, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে গভীর নিম্নচাপ। শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর বুধবার সন্ধেয় তা পারাদ্বীপ ও সাগর দ্বীপের মধ্যে দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে। জানাল মৌসম ভবন। ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার সময় ৬ মিটার অর্থাৎ ২০ ফুট পর্যন্ত সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা। কাল, সোমবার থেকে শুরু বৃষ্টি। প্রবল বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া। তার আগে আজ কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস। বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়াও।