নয়া দিল্লি: দিল্লির (Delhi) ছত্তরপুরে শ্রদ্ধা ওয়ালকর (Shraddha Walkar) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এবার তার লিভ -ইন পার্টনার  আফতাব পুনাওয়ালাকে (Aaftab Amin Poonawala) আরও চারদিনের পুলিশি হেফাজত দিল আদালত। ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এদিন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয়েছিল তাকে। পুনাওয়ালার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে নির্ধারিত সময়ের আগে শুনানি হয়েছিল। 


শুনানির সময়, বিচারক পুনাওয়ালার কাছে জানতে চান কেন এই খুন করেছেন তিনি? কী সমস্যা ছিল? সেখানেই না কি আফতাব দাবি করেন, তাকে প্ররোচিত করা হয়েছিল রেগে যেতে, ক্ষিপ্ত হতে। আর সেই কারণে তিনি খুন করেন শ্রদ্ধাকে! যদিও এ কথা পুনাওয়ালার আইনি সহায়তার পরামর্শদাতা অ্যাডভোকেট অবিনাশ কুমার জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে।  


এদিকে এখনও খোঁজ মেলেনি খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রের। শ্রদ্ধার কাটা মাথার সন্ধানে পুকুরেও তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, শ্রদ্ধাকে খুনের তদন্তে মুম্বই পৌঁছেছে দিল্লি পুলিশের একটি দল। মীরা রোড এলাকার বাসিন্দা গোবিন্দ যাদব নামে এক পণ্য সরবরাহকারী সংস্থার কর্ণধারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। 


পুলিশের দাবি, গোবিন্দর সংস্থাই আফতাবের যাবতীয় জিনিস মুম্বই থেকে দিল্লির ছতরপুরে পৌঁছে দিয়েছিল। পালঘরের ভাসাই এলাকায় যে ফ্ল্যাটে আফতাবের পরিবার থাকত, তা দিনকুড়ি আগে খালি করে তারা উধাও হয়ে যায় বলে দাবি পুলিশের। 


আরও পড়ুন, গঙ্গার ঘাটের অবস্থা দেখে ক্ষোভপ্রকাশ মমতার, মেরামতি করতে তড়িঘড়ি তৎপর পুরসভা!


তবে সোমবার পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, দাঁতের সমস্যা থাকার কারণে এক দন্ত্য বিশেষজ্ঞের কাছে পরামর্শ নিতে গিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ওই চিকিৎসক জানান, পুলিশ তাঁর কাছে চোয়ালের একটি অংশের ছবি নিয়ে আসে। তা দেখে চিকিৎসক জানান, ‘রুট ক্যানেল’ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করিয়েছিলেন তিনি। তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘সাধারণত দন্ত্য চিকিৎসকরা রোগীদের ‘ডেন্টাল রেকর্ড’ নিজেদের কাছে রাখেন। সেই পুরনো রেকর্ড দেখে শ্রদ্ধার দাঁতের অবস্থার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া গেলে এই তদন্ত শেষ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে।"                   


প্রসঙ্গত, পুলিশ সূত্রে দাবি ১৮ মে খুন হন শ্রদ্ধা। খুনের পর সারারাত বাড়িতে দেহ রেখে দিয়েছিল আফতাব। পরের দিন, বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছুরি ও নতুন ফ্রিজ কিনে আনে। বাথরুমে বসে লিভ ইন পার্টনারের দেহ ৩৫ টুকরো করে আফতাব। পরে পলিথিনে মুড়িয়ে ঢুকিয়ে রাখে ফ্রিজে। তারপর ধীরে ধীরে বেশ কয়েকদিন ঘরে, শ্রদ্ধার দেহাংশ ছড়িয়ে দেয় ছত্তরপুর এবং মেহরৌলির জঙ্গলে। শুধু দেহ টুকরো করে ছড়িয়ে দেওয়াই নয়, সূত্রের দাবি, পুলিশি জেরায় অফতার জানিয়েছে, খুনের পর ২৩ মে, বাড়িতে থাকা শ্রদ্ধার সব জিনিসপত্র সরিয়ে দেয় সে। এমনকী বেড রুমে থাকা শ্রদ্ধার ছবিগুলিও পুড়িয়ে ফেলে আফতাব।