নয়া দিল্লি : করোনার বাড়বাড়ন্তের মধ্যেই এরাজ্যে বেড়েছে ডেঙ্গি(Dengue) নিয়ে আতঙ্ক। রাজধানী দিল্লিতেও(Delhi) বাড়ছে ডেঙ্গি সহ মশাবাহিত রোগের প্রকোপ। এই চিত্র দেশের অন্যান্য় কয়েকটি রাজ্যেও দেখা গেছে। যা নিয়ে চিন্তিতি কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে ডেঙ্গি মোকাবিলায় দেশের ৯টি রাজ্য় ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে বিশেষজ্ঞ দল পাঠাল মোদি সরকার। ওই দল সংশ্লিষ্ট রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে জনস্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন বিষয়ে গাইডেন্স দেবে বলে জানা গেছে।


হরিয়ানা, পাঞ্জাব, কেরল, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, দিল্লি এবং জম্মু ও কাশ্মীর- এই নয় রাজ্যে ব্যাপক হারে ডেঙ্গির সংক্রমণ দেখা দিয়েছে বলে খবর। তার পরই এইসব রাজ্যে বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। ওই দলে থাকছে-  National Centre for Disease Control and National Vector Borne Disease Control Programme-এর আধিকারিকরা। 


রাজধানী দিল্লিতে এ বছর ১৫৩০-এর বেশি ডেঙ্গি আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। যার মধ্যে শুধু অক্টোবরেই আক্রান্ত হয়েছে ১২০০ জন। গত চার বছরে এক মাসের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। অক্টোবরে মহারাষ্ট্রের পুণেতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্য়া ১৬৮। যদিও সেপ্টেম্বরে পুণেতে এই সংখ্যাটা ছিল ১৯২। ডেঙ্গিতে ইতিমধ্যেই ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে চণ্ডীগড়ে। উত্তরপ্রদেশেরে গাজিয়াবাদে মশাবাহিত এই রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে ব্যাপক। ইতিমধ্যেই সেখানে আক্রান্ত প্রায় ১ হাজার জন। যার ৬৮ শতাংশই অক্টোবর মাসের।


ডেঙ্গি (Dengue) ছাড়াও ম্যালেরিয়া (Malaria), চিকুনগুনিয়ার (Chikungunya) মতো রোগ বেড়েছে দিল্লিতে। তাই হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত শয্যার হার ৩০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সংশ্লিষ্ট শয্যা মশাবাহিত রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হবে। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ কমেছে। আর মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


মশাবাহিত রোগের প্রকোপ এরাজ্যেও কম নয়। দিনকয়েক আগেই জানা যায়, বিধাননগর পুর নিগম এলাকায়  অক্টোবর মাসে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ জন। যেটা জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ছিল ২৫ জন। শুধু অক্টোবর মাসেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ জন। সম্প্রতি হাওড়ায় (Howrah) ডেঙ্গিতে (Dengue) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর।


দিনকয়েক আগে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একটি বৈঠক করে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। সেই বৈঠকে রাজ্যের ৪৩টি পুর এলাকার ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, যে বাড়িতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যাবে তার ৫০ মিটারের মধ্যে ফিভার সার্ভে করতে হবে। ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিললেই জানাতে হবে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে। অন্যদিকে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে মশাদমন অভিযানের সময়সীমা ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।