নয়াদিল্লি: কোভিড থেকে উদ্ভুত অতিমারি, যুদ্ধ পরিস্থিতি, ভোট উৎসব, এ সবের মধ্যে পড়ে জলবায়ু পরিবর্তন (Climate Change), পরিবেশ রক্ষার জিগির ধুয়েমুছে সাফ। কিন্তু এ সবের ধার ধারে না পরিবেশ। দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচার সইতে সইতে তলে তলে ক্ষয় ধরেছে তার। তাই এতকিছুর মধ্যেও শনিবার ‘আর্থ আওয়ার’ (Earth Hour 2022) পালন করছেন পরিবেশ সচেতন (Saving Nature) মানুষ এবং দেশগুলি, যাতে তুলো থাকলেও বিপদের ঘণ্টা  কানে পৌঁছয় সকলের।


পরিবেশ রক্ষায় ২০০৭ সালে প্রথম এই উদ্যোগ নেয় ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার’ সংগঠন। বছরের একটি দিনের নামকরণ হয় ‘আর্থ আওয়ার’, ভারত তথা বাংলায় সেটি ‘বিদ্যুৎ সাশ্রয়’ প্রহর হিসেবেই পরিচিত। উদ্দেশ্য একটাই, বছরের একটা দিন অন্তত এক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সাশ্রয়। এর আওতায় রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত জরুরি পরিষেবা ছাড়া সব ক্ষেত্রে বিদ্যুতের ব্যবহার বন্ধ রাখা হয়।


জনপ্রিয় স্থাপত্যে বন্ধ থাকছে আলো


এ বছর ২৬ মার্চ অর্থাৎ শনিবার পালিত হচ্ছে ‘আর্থ আওয়ার’। সেই উপলক্ষে কলকাতার হাওড়া ব্রিজ, ইন্ডিয়ান মিউজিয়াম, টাটা সেন্টারের আলো  নেভানো হতে পারে। রাজধানী দিল্লিতে রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত  ইন্ডিয়া গেট, রাষ্ট্রপতি ভবন, কুতুব মিনার, মুম্বইয়ে ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস, গ্রেটার মুম্বই পুরসভা, অসমে গুয়াহাটি বিমানবন্দর, রাজস্থানে উমেদ ভবন, মধ্যপ্রদেশের কমলাপতি রেল স্টেশনে বৈদ্যুতিক আলোর (Save Electricity) ব্যবহার বন্ধ থাকছে।


আরও পড়ুন: India-China Conflict: দফায় দফায় বৈঠকও নিস্ফল, লাদাখ সীমান্ত থেকে সেনা সরানোয় গড়িমসি চিনের


স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশবাসীকেও ‘আর্থ আওয়ার’ পালনে আহ্বান জানিয়েছে সরকার, গ্রাম থেকে শহর, সর্বত্র একঘণ্টার জন্য আলো নিভিয়ে রাখার অনুরোধ জানান হয়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সুস্থ পরিবেশে বেড়ে ওঠায় কিছু অবদান থাকে সকলের।


পৃথিবীকে ভালবেসে


তবে পশ্চিমি দেশগুলিতে ‘আর্থ আওয়ার’ নিয়ে যে চেতনতা এবং উদ্দীপনা দেখা যায়, ভারতের ছবিটি তার থেকে আলাদা। অধিকাংশ মানুষ ‘আর্থ আওয়ার’ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। আবার জেনেও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে গরজ দেখান না এনেকে। তাঁদের যুক্তি, এই এক ঘণ্টার ‘আর্থ আওয়ার’ পালন করে কোনও বদল আনা যাবে না। কিন্তু পরিবেশ প্রেমীদের মতে, গোটা বিশ্ব যদি এক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সাশ্রয় করে, ভবিষ্য প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে এগনোর থেকে বাঁচানো যাবে।


বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের পাশাপাশি, পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হওয়া, পৃথিবীকে ভালবাসাও প্রয়োজন বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, মাটির নিচে লুকিয়ে থাকা শেষ কার্বনটুকুও শুষে নেওয়া হচ্ছে। তাই কল্পনার কোনও অবকাশই নেই, বিপদের ঘণ্টা ঝুলছে প্রত্যেকের শিয়রে।