গুয়াহাটি: বাজ পড়ে বেঘোরে প্রাণ হারাল ১৮টি হাতি। মর্মান্তিক যে দুর্ঘটনা ঘটেছে অসমের নওগাঁ জেলার। বন বিভাগের সিনিয়র এক অফিসার জানিয়েছেন গতকাল রাতে প্রবল বজ্র-বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি হয় নওগাঁর কুন্ডলী এলাকায়। যে সময় বাজ পড়ে প্রাণ হারিয়েছে ১৮টি হাতি।


কুন্ডলীর কাঠাইয়াতোলি রেঞ্জের প্রিন্সিপাল চিফ কনভারসেটর অফ ফরেস্ট (ওয়াইল্ডলাইফ) অমিত সহায় সংবাদসংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, 'এলাকাটি ভীষণই দূর্গম। উদ্ধারকারী দলের সেখানে পৌঁছতে এদিন দুপুর গড়িয়ে যায়। সেখানে গিয়ে দেখা যায় দুটি জায়গায় মোট ১৮টি হাতি মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পাহাড়ের উপরে ১৪টি হাতির মৃতদেহ ও পাহাড়ের নীচে ৪ টি হাতি পড়েছিল।' প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়েই হাতিগুলির মৃত্যু হয়েছে। হাতিদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে, যে রিপোর্ট পাওয়ার পরই নিশ্চিত হওয়া যাবে মৃত্যুর আসল কারণ, বলেও জানান তিনি।


বাজ পড়ে মৃত্যুকেই প্রাথমিক কারণ হিসেবে মনে করা হলেও ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা ও গোটা এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে বিষয়টা নিশ্চিত হতে চাইছে কুন্ডলীর বনবিভাগ। চিফ ওয়াইল্ডলাইফ ওয়ার্ডেন এবং ডিএফও-র (ডিস্ট্রিক্ট্র ফরেস্ট অফিসার) নেতৃত্বে যে তদন্ত হবে। একসঙ্গে এতগুলো হাতির মৃত্যুতে শোকের আবহ সেখানকার স্থানীয়দের মধ্যেও।


অসমের বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য কাঠাইয়াতোলী রেঞ্জে ১৮টি হাতির মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন। তিনি নিজেও পরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। পরে অসমের বনমন্ত্রী জানান, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নির্দেশে তিনি ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছেন।


২০১৭ সালের সেনসাস অনুযায়ী, ভারতের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বাধিক হাতির সংখ্যা অসম রাজ্যে। সবথেকে বেশি হাতি রয়েছে কর্ণাটকে। শুধু তাই নয় ২০০২ সালে যেখানে অসমে হাতির সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ২৪৬টি, সেটাই ২০১৭ সালে বেড়ে হয়েছিল ৫ হাজার ৭১৯টি। অসমের বন্য হাতিদের মৃত্যু বরাবরই সেখানকার প্রশাসনের উদ্বেগের কারণ। চোরাশিকারিদের হাতে প্রাণ হারানো থেকে ট্রেনলাইনে এসে পড়া, একাধিক কারণেই অসমে অনেক হাতির মৃত্যু হয়েছে এর আগে। ২০১৩ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় ১০০ হাতির অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে অসমে।