নয়াদিল্লি : মাদ্রাজ হাইকোর্টের করা 'খুনের মামলা' মন্তব্যের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল নির্বাচন কমিশন। গত সোমবার মাদ্রাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে নির্বাচন কমিশনকে তুলোধনা করে বলেছিলেন, 'করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য একমাত্র দায়ী নির্বাচন কমিশন। আপনাদের অফিসারদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু হওয়া উচিত।' যে মন্তব্যের বিরুদ্ধে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে গিয়েছে নির্বাচন কমিশন।


শুক্রবারই মাদ্রাজ হাইকোর্টের কাছে যে বিষয় নিয়ে নিজেদের উষ্ণাপ্রকাশ করেছিল নির্বাচন কমিশন। তাদের বক্তব্য ছিল, হাইকোর্টের কোনও পর্যবেক্ষণ যেন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত না হয়, তেমনটা হলে আখেরে কমিশনের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন হাইকোর্টে জানিয়েছিল, নির্বাচন পরিচালনার জন্য গঠিন সংবিধান মেনে গঠিন নিরপেক্ষ এক সংস্থার বিরুদ্ধে এহেন পর্যবেক্ষণ জনমানসে ভুল বার্তা দিচ্ছে।


ভোট গণনার জন্য কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে সেটা বিস্তারিতভাবে না জানালে গণনা বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল মাদ্রাজ হাইকোর্ট। যদিও শেষপর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে তারা সেই পথে হাঁটেনি। মাদ্রাজ হাইকোর্টে নির্বাচন কমিশন জানায়, কেরল ও পশ্চিমবঙ্গ হাইকোর্টও স্বস্তিপ্রকাশ করেছে ভোটগণনার জন্য তাদের করা বিভিন্ন আয়োজন নিয়ে। মাদ্রাজ হাইকোর্ট তাদের পর্যবেক্ষণে জানায়, কাউকে অপমানিত করার কোনও অভিপ্রায় তাদের ছিল না, তবে কেন এতদিন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, সেটা জানতেই প্রশ্নগুলো তুলেছিল তারা। এমনকি কেন্দ্রের ভূমিকারও কড়া সমালোচনা করে তারা।


প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্ট ভোটগণনা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের করা বন্দোবস্ত নিয়ে আপাতত স্বস্তিপ্রকাশ করেলও প্রথম তারাই তীব্র সমালোচনা করেছিল কমিশনের। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণণ ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ কমিশনকে কটাক্ষ করে বলেছিল, সমস্ত ক্ষমতা থাকা সত্বেও তাঁর সদব্যবহার করছে না কমিশন। যদি তারা শক্তহাতে পরিস্থিতি না সামাল দেয় তাহলে হাইকোর্টই সেই বন্দোবস্ত করবে।


কলকাতা হাইকোর্টের যে রায়ের পরই করোনা পরিস্থিতিতে পরবর্তী ভোট ও ভোটগণনার আগে বাড়তি তৎপর হয় নির্বাচন কমিশন। বঙ্গে মিটিং, মিছিল, জনসভা একে একে নিষিদ্ধ করা হয়। পরে জানিয়ে দেওয়া ভোটগণনার দিনে একেবারে হাতে গোণা লোক বাদে কেউ গণনাকেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে পারবেন না। নির্বাচন কমিশন নিষেধাজ্ঞা জারি করে সমস্ত রকম বিজয়োৎসবেও।