নয়াদিল্লি: দেশে একদিকে যখন করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ে বিপদ বাড়ছে, অন্যদিকে তখন পাঁচ রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার ক্রমশ জোরদার হচ্ছে। ভোটের সময় যতই কাছে আসছে, নির্বাচনের প্রচার আরও জোরদার হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই ভোটের এই প্রচারে কোভিড-বিধির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। যে দলই হোক না কেন, প্রত্যেক দলই হাজার হাজার মানুষের ভিড় টানতে রাজনৈতিক কর্মসূচীর আয়োজন করছে। চলছে রোড শো-ও। এরইমধ্যে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ার  ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। এ কথা মাথায় রেখেই আজ গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিবও। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের শীর্ষ আধিকারিক এই বৈঠকে নির্বাচন কমিশনকে ওমিক্রনের বিপদ এবং এই ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য জানাবেন। নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এদিন সকাল ১১ টায় কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিবের বৈঠক হবে। বৈঠকে রাজনৈতিক দলগুলির মিটিং-মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। 


সূত্র মারফৎ পাওয়া খবর অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিবের কাছে ওমিক্রনের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি ও এ সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জানতে চাইছেন। কমিশন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কাছ থেকে এটাও জানতে চায় যে, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে আর এর থেকে রক্ষা পাওয়ার কোনও উপায় তৈরি করা হয়েছে কিনা। এরইমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে যে, দেশের একটা বড় জনগোষ্ঠী করোনা টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় জোড পেয়ে গিয়েছেন। তাহলে এই পরিস্থিতিতে ওমিক্রনের বিপদ কতটা। নির্বাচন কমিশন আরও জানতে চাইবে, এমন পরিস্থিতিতে যদি নির্বাচন আয়োজন করা হয়, তাহলে করোনার নয়া ভ্যারিয়েন্টের ছড়িয়ে পড়া কীভাবে রোখা যায়। সবমিলিয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের এদিনের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এই বৈঠকের কিছুদিন আগেই এলাহাবাদ হাইকোর্ট জাতীয় নির্বাচন কমিশন ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে ওমিক্রনের বিপদের কথা মাথায় রেখে ভোটের প্রচারে সমাবেশ ও রোড শো-তে নিষেধাজ্ঞা জারির আর্জি জানিয়েছিল। প্রয়োজনে ভোট স্থগিত রাখার আর্জিও জানানো হয়েছিল। 






 


হাইকোর্ট এ ব্যাপারে কোনও আদেশ না দিলেও যে আবেদন জানিয়েছে,  নিশ্চিতভাবে তাতে কমিশনের দায়িত্ব আরও বেড়ে গিয়েছে। কারণ, কমিশনকে ঠিক করতে হবে যে, ওমিক্রন উদ্বেগের মধ্যেই যদি নির্বাচনের আয়োজন করা হয়, তাহলে তা কীভাবে করা সম্ভব হবে। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে ভোটের সময়ও কমিশন কোভিড বিদি মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশের বাস্তব প্রতিফলন যথাযথভাবে হয়নি বলেই অভিযোগ। 
কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে কমিশন ওমিক্রন নিয়ে স্পষ্ট ধারনা পাবে বলেই মনে করা হচ্ছে। ওমিক্রনের ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে কমিশন হাইকোর্টের আর্জির বিষয়টিও বিবেচনা করে দেখতে পারে, যেখানে ভোট আপাতত পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।