নয়াদিল্লি: ধর্মের নামে সমাবেশ। আর সেখান থেকেই নরসংহারে (Ethnic Cleansing) আহ্বান। হরিদ্বারের পুণ্যভূমি থেকে এমনই ভিডিয়ো উঠে এসেছে। তাতে এ বার নড়েচড়ে বসলেন দেশের তাবড় আইনজীবীরা। একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতি এমন আচরণের তীব্র নিন্দা করে সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) প্রধান বিচারপতি এনভি রমনাকে (NV Ramana) চিঠি দিলেন তাঁরা। তাঁরা জানিয়েছেন, প্রকাশ্য সমাবেশে ধর্মীয় অবগুণ্ঠনের আড়াল থেকে এমন ঘৃণার বিষ ছড়ানো রোজকার ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অবিলম্বে এ নিয়ে পদক্ষেপ করা উচিত শীর্ষ আদালতের।


দুশ্যন্ত দাভে, প্রশান্ত ভূষণ, বৃন্দা গ্রোভার, সলমন খুরশিদ এবং অঞ্জনা প্রকাশের মতো দেশের ৭৬ জন বিশিষ্ট আইনজীবী এবং বিচারক মিলে প্রধান বিচারপতিকে ওই চিঠি লিখেছেন। তাতে দিল্লি এবং সম্প্রতি হরিদ্বারে আয়োজিত দু’টি সমাবেশের উল্লেখ করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, ‘যে দু’টি ঘটনার উল্লেখ করা হচ্ছে, সেখানে নেহাত ঘৃণা ভাষণ দেওয়া হয়নি। বরং দেশের একটি সম্প্রদায়ের মানুষকে হত্যার আহ্বান জানানো হয়েছে, যা দেশের ঐক্য এবং অখণ্ডতার জন্য বিপজ্জনকই নয়, দেশের লক্ষ লক্ষ মুসলিম নাগরিকের নিরাপত্তা এবং জীবনের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে এর সঙ্গে’।


আরও পড়ুন: Covid Precautionary Dose: বুস্টার ডোজ পেতে কোমর্বিডিটি সার্টিফিকেট দেখাতে হবে ষাটোর্ধ্বদের


সম্প্রতি হরিদ্বারে আয়োজিত একটি ধর্মীয় সভায় মুসলিমদের হত্যা এবং তাঁদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার ব্যবহারের ডাক দেওয়া হয়। নেটমাধ্যমে সেই ভিডিয়ো সামনে আসতেই নিন্দার ঝড় ওঠে। এবিপি আনন্দ ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি। তবে তা নিয়ে চাপের মুখে পড়ে ওই ঘটনায় চার দিন পর মামলা দায়ের করে হরিদ্বার পুলিশ। ভিডিয়োয় ভিড়ের সামনে মঞ্চে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তিকে উল্লাস করতে দেখা গেলেও, প্রথমে শুধুমাত্র এক জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। পরে ধর্মদাস এবং সাধ্বী অন্নপূর্ণা নামে আরও দু’জনের নাম যোগ করা হয় তাতে।


ভিডিয়োয় অন্নপূর্ণাকে বলতে শোনা যায়, “ওদের শেষ করতে চাইলে, সকলকে মেরে ফেলতে হবে। ১০০ সৈনিক প্রয়োজন আমাদের, যাঁরা ওদের ২০ লক্ষকে সাবাড় করে জয় হাসিল করবে।” ওই সভার আয়োজনের দায়িত্বে ছিলেন ‘হিন্দু রক্ষা সেনা’র প্রবোধানন্দ গিরি। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ-সহ বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন সভা-মিছিলে প্রায়শই দেখা যায় তাঁকে। তবে সমালোচনার মুখে পড়েও প্রবোধানন্দ জানান, পুলিশকে ভয় করেন না তিনি।


নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিয়োয় প্রবোধানন্দও ছিলেন। তাতে তাঁকে বলতে শোনা যায়, “মায়ানমারের মতো আমাদের পুলিশ, রাজনীতিক, সেনা এবং প্রত্যেক হিন্দুকে হাতে অস্ত্র তুলে নিতে হবে। সাফাই অভিযান চালাতে হবে আমাদের। এ ছাড়া কোনও উপায় নেই।” তবে নিজের মন্তব্য নিয়ে বিন্দুমাত্র আফসোস নেই বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান প্রবোধানন্দ।