নয়াদিল্লি: নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে হু হু করে। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে বেকারত্বের হার। সেই পরিস্থিতিতেই মধ্যবিত্তের উপর এ বার ইপিএফ (EPF) খাঁড়া নেমে এল। গত ১০ বছরে সর্বনিম্নে গিয়ে ঠেকল ইপিএফ বাবদ সুদের হার (EPF Interest Rate)। এত দিন ইপিএফ থেকে ৮.৫ শতাংশ হারে সুদ পাওয়া যেত, এ বার তা কমিয়ে ৮.১ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে দিল্লিসূত্রে খবর। ২০২১-’২২ অর্থবর্ষের জন্য কমল সুদের হার।
কর্মচারী ভবিষ্যনিধি তহবিলের (এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ইপিএফ) সুদের হার নিয়ে সম্প্রতি গুয়াহাটিতে বৈঠক করেন সেন্ট্রাল বোর্ড অফ ট্রাস্টিজ (CBT)-এর আধিকারিকরা। সেখানেই ২০২১-'২২ অর্থবর্ষের জন্য সুদের হার কমানোর সুপারিশ করা হয়। গত এক দশকে এই প্রথম এত কমল ইপিএফ-এর সুদের হার। এর আগে, গত বছর মার্চ মাসে ২০২০-'২১ অর্থবর্ষের জন্য ইপিএফ-এর সুদের হার ৮.৫ শতাংশ করার সুপারিশ করে ইপিএফও বোর্ড। সেই থেকে আরও কমল সুদের হার। কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকে সিবিটি-র নেতৃত্বে রয়েছেন। কর্মী এবং মালিকপক্ষের প্রতিনিধিরাদের তরফেও সুপারিশ রাখা হয়। তার পর তাতে সিলমোহর দেয় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক।
বর্তমানে দেশের ৫ কোটি মানুষ ইপিএফ-এর আওতায় রয়েছেন। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে তাঁদের জীবনে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এ নিয়ে এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অর্থনীতিবিদ শৈবাল কর বলেন, “এটা ভোটের প্রতিক্রিয়া বলেই মনে করছি আমি। চার রাজ্যে ভাল ফল করে সরকার যদি মনে করে মানুষ যা খুশি করার অধিকার দিয়েছেন, তাহলেই এমন পদক্ষেপ করা যায়। তবে ইপিএফ-এ সাধারণ ভাবে হাত না দেওয়ারই কথা ছিল সরকারের। সুদের হারও দীর্ঘ দিন এক রাখা হয়েছিল। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যেখানে রেপো রেট এক রেখেছে, সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার ইপিএফ এবং অন্য ক্ষেত্রে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু যেহেতু বয়স্ক মানুষ, পেনশনভোগী মানুষ এর আওতায় রয়েছেন, তাঁদের কথা ভেবেই এত দিন হাত না দেওয়ার কথা ছিল। অন্য জায়গায় রোজগারের সম্ভাবনা কমেছে. জমানো টাকরা এবং সুদের উপরই মানুষ নির্ভর করে থাকেন। সেখানে কোপ বসানো অনুচিত কাজ বলে মনে করি আমি।”
রাজ্যে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সরাসরি নরেন্দ্র মোদি সরকার এবং বিজেপি-কে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, "অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক, বিপজ্জনক সিদ্ধান্ত। মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত, অবসরমুখী মানুষের কাছে ইপিএফ নির্ভর করা জায়গা। আজ দেশে যখন আয়ের সুযোগ কমছে, সেখানে এ ভাবে মানুষকে অবিচারের দিকে ঠেলে দেওয়া ভয়ঙ্কর। আসলে দেশকে চার রাজ্যে জয়ের উপহার দিল নরেন্দ্র মোদি সরকার এবং বিজেপি। কেনেদ্র ।এ আর্থfক নীতি নিয়ে চলছে, তাদের যে দৃষ্টিভঙ্গি, তা সর্বনাশা। এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সরকারকে দুর্বল না করলে, আরও কোপ নামবে। যুদ্ধের ছুতো করে মূল্যবৃদ্ধির ই্ঙ্গিত ইতিমধ্যেই দিয়ে রেখেছেন মোদি। ভেবে দেখুন, যুদ্ঘধের আগেই কিন্তু ভোজ্য তেল, গ্যাস, সার, ওষুধ, সবের দাম বেড়েছিল।''