নয়াদিল্লি: ডায়েট বা ব্যায়াম নয়, স্থূলতা (Tackling Obesity) কমাতে এ বার ঘাড়ে চাপতে পারে মোটা চড়া করের দাওয়াই। দেশ জুড়ে মহিলা,শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে স্থূলতা যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা রুখতে এ বার এমনই পদক্ষপের চিন্তা-ভাবনা করছে নীতি আয়োগ (Fat Tax in India)। তার আওতায় উচ্চ শর্করা, ফ্যাট এবং লবণযুক্ত প্যাকেটজাত খাবারে চাপানো হতে পারে চড়া হারের কর।


দেশের নাগরিকদের মধ্যে স্থূলতা বৃদ্ধি নিয়ে ২০২১-’২২ সালের বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে নীতি আয়োগ (Niti Aayog)। তাতেই তাতে উচ্চ শর্করা, ফ্যাট এবং লবণযুক্ত প্যাকেটজাত খাবার, তার মোড়ক, বিপণন এবং বিজ্ঞাপনের উপর চড়া কর বসানোর পক্ষে সুপারিশ করা হয়েছে। ইনস্টিটিউট অফ ইকনমিক গ্রোথ এবং পাবলিক হেল্থ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে যৌথ ভাবে বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে।


বর্তমানে দেশে নন-ব্র্যান্ডেড অর্থাৎ অখ্যাত এবং ছোট সংস্থার ভুজিয়া, চিপস এবং স্ন্যাক্সের (Unhealthy Foods) উপর ৫ শতাংশ পণ্য পরিষেবা কর (Goods and Services Tax) চালু রয়েছে। ব্র্যান্ডেড অর্থাৎ নামী সংস্থার ক্ষেত্রে এই করের হার ১২ শতাংশ। একই সঙ্গে তামাকজাত দ্রব্যের উপর ২৮ শতাংশ কর চালু রয়েছে, যাতে মানুষকে ওই সমস্ত দ্রব্য বিমুখ করে তোলা যায়। ওই সমস্ত দ্রব্যের মোড়কের উপর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সতর্কীকরণও লিপিবদ্ধ রাখা বাধ্যতামূলক রয়েছে। তা সত্ত্বেও ব্যবহার এবং সেবন কমছে না। তাতেই নয়া পদক্ষেপের ভাবনা শুরু হয়েছে।


আরও পড়ুন: Russia Ukraine War: ইউক্রেনে যুদ্ধ-উদ্বেগের মাঝেই ২১৯ ভারতীয় পড়ুয়াকে নিয়ে মুম্বই পৌঁছল বিমান


২০১৯-’২০ সালের জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা অনুযায়ী, দেশে মহিলাদের মধ্যে স্থূলতার হার বেড়ে ২৪ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে, ২০১৫-’১৬ সালে যা ছিল ২০.৬ শতাংশ। পুরুষদের মধ্যে স্থূলতার হার বেড়েছে হয়েছে ২২.৯ শতাংশ, আগে যা ১৮.৯ শতাংশ ছিল। তেলেঙ্গানা, কেরল এবং হিমাচলপ্রদেশের মতো রাজ্যে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সি পুরুষ এবং মহিলা জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশই স্থূলতার শিকার।


তাতেই অস্বাস্থ্যকর খাদ্যভ্যাস থেকে মানুষকে দূরে রাখার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে সরকারের অন্দরে। তার জন্য নীতি আয়োগের সদস্যদের নিয়ে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। যাবতীয় তথ্য এবং পরিসংখ্যান যাচাই করে দ্রুত গতিতে কী ভাবে স্থূলতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, তার নীল নকশা জমা দিতে হবে তাদের। সেই মতো পদক্ষেপ করবে তারা।  


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৭৫ থেকে গোটা বিশ্বে স্থূলতা লতিন গুণ বেড়ে গিয়েছে। ২০২০ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধুমাত্র ভারতেই স্থূলতার শিকার সাড়ে ১৩ কোটি মানুষ। ২০৩০ আসতে আসতে বিশ্বব্যাপী স্থূলতার ২৭.৮ শতাংশই ভারতীয় হবেন বলে দাবি ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশন।