পটনা:  সীমান্তে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ হয়েছেন ছেলে। তাঁর স্মৃতিসৌধ তৈরি করতে গিয়েই চরম অপদস্থ হলেন বাবা। টেনে-হিঁচড়ে, টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হল তাঁকে। এমনকি তাঁকে বেধড়ক মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত আর কেউ নয়, খোদ পুলিশ। শহিদ জওয়ানের বাবার সঙ্গে তাদের এমন আচরণে ফুঁসছে বিহারের গ্রাম। সোশ্যাল মিডিয়ায় শহিদ জওয়ানের বাবাকে হেনস্থার সেই ভিডিও ভাইরাল। শহিদ জওয়ানের বাবাকে গ্রেফতার করা বহয়েছে।


তাঁকে বেধড়ক মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ


সিসিটিভি ফুটেজ থেকে যে দৃশ্য সামনে এসেছে, তা ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে নেট দুনিয়ায় (Bihar Police)। বিহারের বৈশালীর একটি গ্রামের ঘটনা। তাতে গালওয়ানে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ জওয়ান জয় কিশোরের বাবা রাজ পূর সিংহকে টেনে হিঁচড়ে, মাটির উপর দিয়ে কার্যত ঘষটাতে ঘষটাতে টেনে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে পুলিশকে। টেনে নিয়ে গিয়ে শহিদ জওয়ানের বাবাকে পুলিশ বেধড়ক মারধরও করে বলে অভিযোগ পরিবারের (Viral News)। 


শুধু তাই নয়, শহিদ জওয়ানের বাবার বিরুদ্ধে তফসিলি জাতি এবং উপজাতি আইনে (নৃশংসতা প্রতিরোধ) মামলাও দায়ের করেছে পুলিশ। গ্রামের দলিত বাসিন্দাদের কয়েক জন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বলে দাবি পুলিশের। রাজ কপূর সিংহের বিরুদ্ধে সরকারের জমি জবরদখল করার অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়। সেই অনুযায়ীই মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।


আরও পড়ুন: Ambani Family Security: দেশে-বিদেশে ২৪ ঘণ্টা Z+ নিরাপত্তা আম্বানিদের, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের


রাজ কপূর সিংহের অপর ছেলে নন্দকিশোর সিংহ সংবাদমাধ্যমে বলেন, "পুলিশের আধিকারিক এলেন এবং ১৫ দিনের মধ্যে স্মৃতিসৌধ সরিয়ে নেওয়া নির্দেশ দিলেন। গতরাতে আমার বাবাকে গ্রেফতার করেছে ওরা। টানতে টানতে নিয়ে গিয়েছে। গালে থাপ্পড় মারা থেকে অকথ্য ভাষায় তাঁকে গালাগালি দিয়েছে। থানায় নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরও করা হয়েছে বাবাকে।"


নন্দকিশোর জানিয়েছেন, রাতের অন্ধকারে এসে চড়াও হয় পুলিশ। জঙ্গির মতো তাঁর বাবাকে টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয়। রাজ কপূর সিংহের গ্রেফতারির খবর মুহূর্তের মধ্যে ছড়িযে পড়ে সর্বত্র। তাতে সকাল হতেই স্মৃতিসৌধের কাছে এসে ভিড় করেন গ্রামবাসীরা। পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। যদিও পুলিশ অভিযোগ খারিজ করেছে। পুলিশ আধিকারিক পুনম কেশরী জানান, গ্রামবাসীদের অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয়েছে রাজ কপূর সিংহকে। ওই স্মৃতিসৌধ গ্রামের অন্য এক ব্য়ক্তির খামারে যাওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করছিল বলে অভিযোগ পেয়েছিলেন তাঁরা। 


পুনমের দাবি, "স্মৃতিসৌধ তৈরিই করেননি শুধু, রাতারাতি তার চারিদিকে দেওয়ালও তোলা হয়। সরকারি জমি জবরদখল করে ওই নির্মাণ গড়ে ওঠে। বার বার ওঁকে বলা হয়েছে। সরকারি জমি জবরদখল করেছেন, বোঝানো হয়েছে তা-ও। কিন্তু কর্ণপাত করেননি।"


থানায় নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরও করা হয় শহিদ জওয়ানের বাবাকে!


এই প্রথম নয় যদিও। গতবছর ফেব্রুয়ারিতেও একই ধরনের ঘটনা সামনে এসেছিল। প্রয়াত জওয়ান ছেলের স্মৃতিতে সৌধ গড়েছিল এক পরিবার। সেখানেও সরকারি জমি জবরদখলের অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে বিস্তর ঝামেলা হয়।