ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: জালিয়াতির নতুন ফাঁদ। AI বা, Artificial intelligence-এর মাধ্য়মে প্রতারণা! এক অধ্য়াপককে ভয় দেখিয়ে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রতারকদের বিরুদ্ধে। বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা, পেশায় অধ্য়াপক এক ব্য়ক্তি, কর্মসূত্রে হায়দরাবাদে থাকেন।
অধ্য়াপকের দাবি, সম্প্রতি তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। বলা হয়, ক্য়ুরিয়রে আসা, তাঁর একটি পার্সেল মুম্বই কাস্টমসে আটকে রয়েছে। ফোনের অপর প্রান্তে থাকা এক ব্য়ক্তি বলেন, এ নিয়ে মুম্বই পুলিশ অধ্য়াপককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান। অধ্য়াপকের দাবি, সেইমতো, স্কাইপে কথা বলতে রাজি হন তিনি।
প্রথমে মুম্বই পুলিশে কর্মরত বলে পরিচয় দিয়ে এক ব্য়ক্তি তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। সেই ব্য়ক্তি বলেন, অধ্য়াপকের নামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি আরও বিশ্বাসযোগ্য় করতে, স্কাইপে আরেকজন আসেন।
তিনি নিজেকে সিবিআইয়ের আধিকারিক পরিচয় দেন।
শুধু তাই নয়, সেই অফিসার নিজেকে বিশ্বাসযোগ্য় প্রমাণ করাতে, একটি ইউটিউব লিঙ্ক দেন। যেখানে, সিবিআই অফিসারের নাম, পরিচয়, ব্য়াচ নম্বর সব ডিটেলসে লেখা। সেই সিবিআইয়ের আধিকারিক বলেন, অধ্য়াপকের নামে খোদ সুপ্রিম কোর্টের অ্য়ারেস্ট ওয়ারেন্ট আছে। যে কোনও মুহূর্তে অধ্য়াপককে অ্য়ারেস্ট করা হতে পারে।
এতে ভয় পেয়ে যান অধ্য়াপক। অভিযোগ, সেই সুযোগে, তাঁর থেকে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় অভিযুক্তরা। এর পরই বিষয়টি নিয়ে বাড়িতে জানান অধ্য়াপক। জানান বাঁশদ্রোণী থানায়। অভিযোগ জানান হায়দরাবাদের লোকাল থানা ও সাইবার ক্রাইম শাখায়। হায়দরাবাদ পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তে নেমে জানা যায়, পুরোটাই জালিয়াতি।
AI বা আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্সের মাধ্য়মে লিপ সিঙ্ক করে প্রতারণা করা হয়েছে। অর্থাৎ, এক জনের মুখের কথা, আরেক জনের মুখে বসিয়ে ভয় দেখানো হয়েছে অধ্য়াপককে। এ ক্ষেত্রে সত্য়িকারের কোনও এক সিবিআই অফিসারের ভিডিও বেছে নিয়ে, তাঁর মুখে অন্য়ের কথা বসিয়ে, প্রতারণার ফাঁদ পেতেছিল অভিযুক্তরা।
বর্তমানে হায়দরাবাদ পুলিশ অভিযোগের তদন্ত করছে। কিন্তু আতঙ্কের কথা ভুলতে পারছেন না অধ্য়াপক ও তাঁর পরিবার।