পানাজি: দলের অন্দরে কোনও দ্বন্দ্ব নেই, বিদ্রোহের অবকাশ নেই কোথাও। কয়েক ঘণ্টা আগেই বিবৃতি দিয়েছিল কংগ্রেস (Goa Congress)। কিন্তু বিদ্রোহের আগুন ছাড়া ধোঁয়া যে ওঠেনি, তা বোঝা গেল রাত বাড়তেই। দলের অন্দরে বিদ্রোহের আগুন জ্বালানোর প্রচেষ্টা করায় বিধানসভায় নিজেদের নেতাকেই এ বার পদ থেকে সরাল তারা। লোবোর বিরুদ্ধে দলবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। 


মাইকেল লোবো কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত


বিজেপি (BJP) ছেড়ে ২০২০-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেই কংগ্রেসে যোগদান করেন লোবো (Michael Lobo)। তাঁকে বিধানসভায় বিরোধী দলনেতাও নির্বাচন করে কংগ্রেস। কিন্তু তিনিই কংগ্রেস বিধায়কদের ভাঙিয়ে বিজেপি-তে ফিরে গিয়ে, গেরুয়া শিবিরের শক্তিবৃদ্ধির পরিকল্পনা করছিলেন বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। 


রবিবার গোয়া কংগ্রেসের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে লোবোকে পদ থেকে সরানোর কথা জানানো হয়। গোয়া প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দীনেশ গুন্ডু রাও বলেন, "বিজেপি-র সঙ্গে মিলে আমাদের নিজেদের লোকজনই ষড়যন্ত্র করছিলেন। এই ষড়যন্ত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন আমাদের নিজেদের দুই নেতা, মাইকেল লোবো এবং দিগম্বর কামাট।"


আরও পড়ুন: Goa Congress: মাথাপিছু ৪০ কোটি টাকার টোপ! বিধায়ক কেনার চেষ্টায় বিজেপি, অভিযোগ গোয়া কংগ্রেসের


গোয়ার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দীনেশ আরও বলেন, "বিজেপি-র সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করছিলেন এই দুই নেতা। নিজের বিরুদ্ধে মামলা ধামাচাপা দিতে বিজেপি-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন তিনি। মাইকেল লোবো যা করেছেন, তা ক্ষমতা এবং পদের লোভে। বিজেপি আসলে বিরোধীদের নির্মূল করতে চায়।"


দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাইকেল লোবো, জিগম্বর কামাট-সহ আরও দুই নেতা ডেলাইয়া লোবো যিনি কিনা, মাইকেলের স্ত্রী, কেদার নায়েক এবং রাজেশ ফলদেসাই, এই পাঁচজনকে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা প্রমোদ সাওয়ন্তের বাড়িতেও দেখা গিয়েছে বলে খবর। শনিবার বিধায়কদের বৈঠকেও দিগম্বর যোগ দেননি বলে জানা গিয়েছে। অথচ বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করেছিল কংগ্রেস। 


গোয়ায় কংগ্রেস ভাঙার চেষ্টায় বিজেপি!


সবমিলিয়ে ১০ জন বিধায়ক কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদান করতে পারেন বলে প্রথমে শোনা গিয়েছিল। পরে সংখ্যাটা কমে ছ'জনে দাঁড়ায়। ৪০ আসনের গোয়া বিধানসভায় কংগ্রেসের ১১ জন বিধায়ক রয়েছে। বিজেপি-র বিধায়ক সংখ্যা ২০। দুই জন এমজিপি বিধায়ক এবং তিন জন নির্দল বিধায়কের সমর্থনও রয়েছে বিজেপি-র। সূত্রের খবর, ২০২৪ -এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেস বিধায়কদের নিজেদের শিবিরে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি। কারণ এর আগে, ২০১৯ সালে দক্ষিণ গোয়া লোকসভা আসন কংগ্রেসের কাছে হারাতে হয়েছিল তাদের।


এমন পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের আটজন বিধায়কও যদি দল ছাড়েন, সে ক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে দলত্যাগবিরোধী আইন কার্যকর হবে না। গোয়া প্রদেশ কংগ্রেসের (Goa Congress) প্রাক্তন সভাপতি গিরীশ ছোডনকরেরর দাবি, কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগদানের জন্য কংগ্রেস বিধায়কদের মাথাপিছু ৪০ কোটি টাকার টোপ দিয়েছে বিজেপি।