আমদাবাদ:  রাতবিরেতে এসে গুজরাত থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল অসম পুলিশ। তার পর বিস্তর কাঠখড় পুড়িয়ে যাও বা জামিন পেয়ে বেরিয়েছিলেন, পাঁচ বছর পুরনো মামলায় গুজরাতের নির্দল বিধায়ক জিগনেশ মেবানিকে (Jignesh Mevani)  হাজতবাসের সাজা শোনাল গুজরাতের একটি আদালত (Gujarat Court)। পাঁচ বছর আগে পুলিশের অনুমোদন ছাড়া জিগনেশ মেহসানা থেকে ধানেরা পর্যন্ত ‘আজাদি মিছিল’ (Azadi Rally) বার করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। সেই মামলায় জিগনেশ এবং অন্য ন’জনকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। তাঁদের তিন মাসের জেল এবং মাথাপিছু ১ হাজার টাকা করে জরিমানা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


পাঁচ বছর পুরনো মামলায় দোষী সাব্যস্ত জিগনেশ


বৃহস্পতিবার মেহসানার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই রায় শুনিয়েছে। অতিরিক্ত বিচারক জে এ পারমার বলেন, “মিছিল বার করা কোনও অপরাধ নয়। কিন্তু অনুমোদন ছাড়া মিছিল বার করা অবশ্যই অপরাধ। এই ধরনের অবাধ্যতা বরদাস্ত করা হবে না।” জিগনেশের পাশাপাশি বাকি যাঁদের দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির নেতা রেশমা পটেলও।


একটি মৃত গরুর গা থেকে চামড়া খুলে নেওয়ার দায়ে ২০১৬ সালে একটি দলিত পরিবারের সাত জনকে চাবুকপেটা করেন তথাকথিত উচ্চবর্ণের প্রায় জনা ৪০ লোকজন। ওই পরিবার চামড়ার ব্যবসায় নিযুক্ত ছিল। অভিযোগ ছিল একটি গরুকে হত্যা করে তার গা থেকে চামড়া খুলে নেন পরিবারের লোকজন। যদিও অভিযুক্তদের দাবি ছিল, মৃত গরুর গা থেকেই চামড়া খুলে নিয়েছিলেন তাঁরা। সেই ঘটনার পর ওই পরিবার চামড়ার ব্যবসা থেকেই সরে আসতে বাধ্য হয়।


আরও পড়ুন: Aadhaar Card Update: আধারের নথি চুরি করছে প্রতারকরা ! কীভাবে লক করবেন বায়োমেট্রিক ?


ওই ঘটনার এক বছর পূর্তিতেই ২০১৭ সালের ১২ জুলাই গুজরাতে ‘আজাদি মিছিল’ বার করা হয়। সেই মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন জিগনেশ। তার জন্য রাষ্ট্রীয় দলিত অধিকার মঞ্চের তরফে পুলিশের কাছে অনুমোদন চেয়েছিলেন জিগনেশের সহযোগী কৌশিক পারমার। শুরুতে অনুমোদন দিয়েও দেয় পুলিশ। কিন্তু পরে সেই অনুমোদন প্রত্যাহার করা হয়। তার পরেও মিছিল বেরোয়। পাঁচ বছর পর সেই  মামলায় জিগনেশ এবং তাঁর সহযোগীদের দোষী সাব্যস্ত করে সাজা শোনাল আদালত।


প্রতিহিংসার শিকার জিগনেশ!


গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের আগে জিগনেশ আসলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে অভিযোগ করছেন বিরোধীরা। কারণ এর আগে, অভিযোগের সত্যতা যাচাই না করেই  গুজরাতে এসে মধ্যরাতে জিগনেশকে তুলে নিয়ে যায় অসম পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচনায় টুইট করায় তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন অসমের এক বিজেপি কর্মী। সেই মামলায় জামিন পাওয়ার পর অন্য একটি মামলা ফের জিগনেশকে গ্রেফতার করে তারা। পরে যদিও তাতেও জামিন পেয়ে যান জিগনেশ। সেইসময় খোদ আদালত অসম পুলিশের সমালোচনা করে। ভুয়ো অভিযোগে জিগনেশকে গ্রেফতার করে হেনস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়ে দেয় আদালত।