নয়াদিল্লি : লোকসভা উপ নির্বাচনে (By Poll) বড়সড় ধাক্কা খেল বিজেপি। হিমাচল প্রদেশে (Himachal Pradesh) তাদের থেকে আসন ছিনিয়ে নিল কংগ্রেস। হিমাচল প্রদেশে দুর্দান্ত ফলের পাশাপাশি রাজস্থান, কর্ণাটকেও উপ নির্বাচনে আশাপ্রদ ফল করল কংগ্রেস। দুই রাজ্যে বিজেপির দুই মুখ্যমন্ত্রীর নিজের এলাকাতেই গেরুয়া শিবিরকে হারাল তারা।


তবে অসমে আবার গেরুয়া শিবিরের কাছে জোরাল ধাক্কা খেয়েছে কংগ্রেস। উত্তর পূর্বে দারুণ ফল করেছে বিজেপির সহযোগী দলগুলি! বছর ঘুরলেই হিমাচল প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে উপনির্বাচনে জোর ধাক্কা খেল সে রাজ্যের শাসকদল বিজেপি। 

হিমাচলের ৩টি বিধানসভাতেই জিতেছে কংগ্রেস। দু’টি আসন ধরে রেখেছে তারা। একটি বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে। হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুরের নিজের জেলার মান্ডি লোকসভা আসনে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। বিজেপির হাত থেকে এই কেন্দ্রটি ছিনিয়ে নিয়েছেন, প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বীরভদ্র সিংহের স্ত্রী প্রতিভা সিংহ।

২০১৯-এর লোকসভা ভোটে মান্ডি লোকসভায় ৪ লক্ষ ৫ হাজার ৪৫৯ ভোটে কংগ্রেসকে হারিয়েছিল বিজেপি। উপনির্বাচনে সেই বিরাট ব্যবধান মুছে কংগ্রেস প্রার্থী জয়ী হয়েছে ৮ হাজার ৭৬৬ ভোটে। গুজরাত লাগোয়া কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দাদরা ও নগর হাভেলির একমাত্র লোকসভা আসনটি বিজেপিকে হারিয়ে জিতেছে শিবসেনা। এই প্রথম মহারাষ্ট্রের বাইরে কোনও লোকসভা আসনে জিতল তারা। রাস্থানের দু’টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে দু’টিতেই জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। একটি বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। আরকেটি আসন ধরে রেখেছে।


ধারিয়াওয়াড় আসনে বিজেপি তৃতীয় স্থানে চলে গেছে। আর বল্লভনগরে বিজেপি চতুর্থস্থানে! মধ্যপ্রদেশের ৩টি বিধানসভা ও ১টি লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন ছিল। বিজেপি ২টিতে , ও কংগ্রেস জয়ী হয়েছে ১টি আসনে।কংগ্রেসের থেকে দু’টি আসন ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। বিজেপির থেকে একটি আসন ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস। মধ্যপ্রদেশের খাণ্ডওয়া লোকসভা কেন্দ্রে ৭৭ হাজারের বেশি ভোটে কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়ে আসন ধরে রেখেছে বিজেপি। ২০১৯-এ এই কেন্দ্রে ২ লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন পদ্ম শিবিরের প্রার্থী।

কর্ণাটকে ২ বিধানসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেস ও বিজেপি একটি করে আসনে জয়ী হয়েছে। কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাইয়ের নিজের জেলার অন্তর্গত হাঙ্গাল বিধানসভা কেন্দ্রটি বিজেপির হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে কংগ্রেস। সিন্দাগি আসনটি জেডিএসের থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে বিজেপি। অসমে ৫টি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে দুর্দান্ত ফল করেছে বিজেপি।

বিরোধীদের থেকে ৩টি আসন ছিনিয়ে নিয়েছে গেরুয়া শিবির। তাদের জোট সঙ্গী জিতেছে বাকি ২ আসনে। বিহারের দুই বিধানসভা কেন্দ্র কুশেশ্বর আস্থান এবং তারাপুরে, লালুপ্রসাদ যাদবের RJD-কে হারিয়ে আসন ধরে রেখেছে নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড তেলঙ্গানায় শাসক দল টিআরএস ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া বিধায়ক এতেলা রাজেন্দ্র ফের উপনির্বাচনে জিতেছেন। মহারাষ্ট্রের দেগলুর বিধানসভায় ফের জয়ী হয়েছে কংগ্রেস। উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী ট্যুইট করে বলেছেন, কংগ্রেসের জয় মানে, দলের প্রতিটি কর্মীর জয়। বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াই জারি থাকুক। ভয় পাবেন না।


ট্যুইটে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা লেখেন, লোকসভা উপনির্বাচনে ৩টির মধ্যে ২টিতেই বিজেপি হেরেছে। যে সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস ও বিজেপির সরাসরি লড়াই হয়েছে, সেখানেই পরাস্ত হয়েছে বিজেপি। হিমাচল, রাজস্থান, কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্রই তার প্রমাণ।


২০২২-এ ৭ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। আসল লড়াই সেখানেই। 


এদিকে বাংলায়, বিপুল জনমতে ভর করে চার-চারটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হল তৃণমূল। ছ’মাসের মধ্যে দিনহাটা আর শান্তিপুর আসন হারালো বিজেপি। চারটির মধ্যে তিনটি কেন্দ্রে বিজেপির জামানত বাজেয়াপ্ত হল। দিনহাটায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের নিজের পাড়াতেও বিজেপির থেকে প্রায় চারগুণ বেশি ভোট পেল তৃণমূল। এরপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানান সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে।