জয়পুর : সঙ্ঘ এবং বিজেপি হিন্দুত্ববাদী হলেও, হিন্দু নয় বলে আগেই মন্তব্য করেছিলেন তিনি। হিন্দুধর্ম (Hinduism) এবং হিন্দুত্ববাদ (Hindutva), দুইয়ের মধ্যে ফারাক নিয়ে ফের সরব হলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী (Rahul Gandhi)। তাঁর মতে, প্রকৃত হিন্দু সত্য অনুসন্ধান করে, সত্যাগ্রহে (Satyagraha) আগ্রহী। কিন্তু হিন্দুত্ববাদীরা শুধুমাত্র ‘সত্তাগ্রহে’ (ক্ষমতার অনুসন্ধানে) আগ্রহী (Sattagraha)। 


মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রবিবার রাজস্থানের জয়পুরে বিরাট সমাবেশে বক্তৃতা করেন রাহুল। সেখানেই নাম না করে সঙ্ঘ (RSS) এবং বিজেপি-কে (BJP) একহাত নেন তিনি। বলেন, ‘‘আমি হিন্দু। হিন্দুত্ববাদী নই। ওরা হিন্দুত্ববাদী। হিন্দু এবং হিন্দুত্ববাদীদের মধ্যে পার্থক্য একটাই, প্রকৃত হিন্দু সত্য অনুসন্ধান করেন, যাকে বলে সত্যাগ্রহ। কিন্তু এক জন হিন্দুত্ববাদী শুধুমাত্র ক্ষমতাদখলে আগ্রহী, যাকে বলে ‘সত্তাগ্রহ’।’’


হিন্দু এবং হিন্দুত্ববাদীর মধ্যে ফারাক বোঝাতে গিয়ে মহাত্মা গাঁধী (Mahatma Gandhi) এবং তাঁর হত্যাকারী নাথুরাম গডসের (nathuram Godse) উদাহরণও টেনে আনেন রাহুল। তাঁর কথায়, ‘‘মহাত্মা গাঁধী সত্য অনুসন্ধানে নেমেছিলেন। তাঁর বুকে তিনটি গুলি দেগে দেয় নাথুরাম গডসে। নাথুরাম হিন্দুত্ববাদী ছিলেন। সত্য নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই এদের। হিন্দুত্ববাদীরা শুধু ক্ষমতা চায়।’’


এর আগেও সঙ্ঘ এবং বিজেপি-কে ভুয়ো হিন্দু বলে কটাক্ষ করতে দেখা গিয়েছিল রাহুলকে। এ দিনও তার পুনরাবৃত্তি করেন তিনি। বলেন, ‘‘প্রকৃত হিন্দু কে ? যিনি সব ধর্মকে সম্মান করেন এবং কাউকে ভয় পান না। এখন যারা ক্ষমতায় রয়েছে, তারা ভুয়ো হিন্দু। বর্তমানে ভারতে হিন্দুত্ববাদীদের শাসন চলছে, হিন্দু শাসন নয়। এই হিন্দুত্ববাদী শাসন সরিয়ে, হিন্দু শাসন ফিরিয়ে আনাই লক্ষ্য আমাদের।’’


উল্লেখ্য, ২০২৩-এর শুরুতেই রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তার আগে সম্প্রতি অশোক গেহলটের মন্ত্রিসভাতেও গুরুত্বপূর্ণ রদবদল ঘটিয়েছে কংগ্রেস, যাতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের মধ্যে কোনওরকম বিবাদ না দেখা দেয় এবং যোগ্যতম সুযোগ পান। কিন্তু রাজস্থানের রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, সেখানকার মানুষ একটানা কোনও দলকেই ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে ভোট দেন না। সে ক্ষেত্রে হিন্দু এবং হিন্দুত্ববাদের ফারাক তুলে ধরে রাহুল আসলে বিজেপি-কে অস্বস্তিতে ফেলতে চাইছেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।