হায়দরাবাদ: এতদিন দুই রাজ্যের একটি মাত্র রাজধানী ছিল। কিন্তু রবিবার থেকে বদলে গেল সেই অবস্থান। হায়দরাবাদ আর তেলঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী রইল না। বরং রবিবার থেকে শুধুমাত্র তেলঙ্গানার রাজধানী হিসেবেই গন্য হবে। ১০ বছর আগে অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে দু'টি পৃথক রাজ্য গঠিত হওয়ার সময়ই এমনটা সিদ্ধান্ত হয়েছিল। রবিবার ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সেই নীতি চালু হল। (Telangana Formation Day)
২০১৪ সালের ২ জুন অন্ধ্রপ্রদেশকে ভেঙে, দু'টি পৃথক রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলঙ্গানা তৈরি করা হয়। সেই সময়কার অন্ধ্রপ্রদেশ পুনর্গঠন আইন ২০১৪ অনুযায়ী, পরবর্তী ১০ বছরের জন্য হাদরাবাদকে দুই রাজ্যের রাজধানী ঘোষণা করা হয়। ওই আইনে বলা হয়, '১০ বছরের বেশি সময় পর্যন্ত হায়দরাবাদ দুই রাজ্যের রাজধানী থাকবে না। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলে ১ নং উপধারা অনুযায়ী হায়দরাবাদ শুধুমাত্র তেলঙ্গানারই রাজধানী থাকবে। অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য নতুন রাজধানী বাছাই করতে হবে সেই সময়'। (Telangana Capital Hyderabad)
এখনও পর্যন্ত নয়া স্থায়ী রাজধানী নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেনি অন্ধ্রপ্রদেশ। অমরাবতী না বিশাখাপত্তনম, কোনটিকে স্থায়ী রাজধানী ঘোষণা করা হবে, সেই নিয়ে আদালতে মামলা ঝুলছে। মুখ্যমন্ত্রী জগনমোহন রেড্ডি জানিয়েছেন, তিনি যদি আগামী দিনেও ক্ষমতায় থাকেন, তাহলে বিশাখাপত্তনম প্রশাসনিক রাজধানী এবং কুর্নুল বিচারবিভাগীয় রাজধানী হিসেবে গন্য হবে। অমরাবতী হবে বিধানসভা আসন।
পৃথক তেলঙ্গানা রাজ্যের দাবিতে বেশ কয়েক দশক ধরে আন্দোলন চলে। শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালের ২ জুন সংসদে অন্ধ্রপ্রদেশ পুনর্গঠন বিল পাস হয়। দু'টুকরো হয়ে যায় অন্ধ্রপ্রদেশ, জন্ম নেয় নয়া রাজ্য তেলঙ্গানা। তেলঙ্গানার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী রেবানাথ রেড্ডি গতমাসেই রাজ্যের আধিকারিকদের নির্দেশ দেন যে, হায়দরাবাদে অবস্থিত লেক ভিউ গভর্নমেন্ট গেস্ট হাউজের মতো যে সমস্ত ভবন ১০ বছরের জন্য অন্ধ্রপ্রদেশকে দেওয়া হয়েছিল, ২ জুনের পর পুনরায় তার দখল নেবে রাজ্য সরকার।
দীর্ঘ এক দশক কেটে গেলেও, এখনও সরকারি সম্পত্তির ভাগ নিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলঙ্গানার মধ্যে বিরোধ রয়েছে। নবম এবং দশম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত ভবনগুলি ছাড়া, বাকি সব ভবন ছেড়ে দিতে তাদের আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ। মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনার আর্জি জানিয়েছিল তেলঙ্গনা সরকার। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি চালু থাকায়, তাতে সায় দেয়নি নির্বাচন কমিশন।
নবম এবং দশম তফসিলের আওতায় ফিল্ম ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশন, সিভিল সাপ্লায়েজ কর্পোরেশন, ডেয়ারি ডেভলপমেন্ট কোঅপারেটিভ ফেডারেশন, বৈদ্য বিধান পরিষদ এবং আরও বেশ কিছু ভবন পড়ছে। তেলঙ্গানা সরকারকে সেই নিয়ে জানুয়ারি মাসে চিঠিও দেয় অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার। আর্মিটেজ বিল্ডিং, CB-CID সদর দফতর এবং লেক ভিউ গেস্ট হাউজটি নিজেদের দখলে রাখতে চেয়ে আবেদন জানায় তারা। সেই নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা করতে চেয়েছিলান রেবানাথ। কিন্তু কমিশনের বিধিনিষেধে তা সম্ভব হয়নি।