কুশিনগর, উত্তরপ্রদেশ : প্রার্থনা করোনা থেকে নিস্তার পাওয়ার। সেই জন্য শতাধিক মহিলা একসঙ্গে জড়ো হয়ে করলেন করোনা মাতার পুজো! অবাক করা এই ঘটনা উত্তরপ্রদেশের কুশিনগর গ্রামের। পুজোর জন্য জড়ো হওয়া মহিলাদের দাবি, করোনা মাতা প্রচণ্ড রাগ করার জন্যই দেশজুড়ে এভাবে বেড়ে চলেছে কোভিডের জেরে মৃত্যু, তাই তাকে শান্ত করার লক্ষ্যেই তাঁদের পুজো। শারীরিক দূরত্ববিধির তোয়াক্কা না করেই যেখানে হাজির শতাধিক মহিলা। রবিবার এই পুজো সারার পর তাদের আরও দাবি, একদিন নয় এভাবে টানা ২১ দিন ধরে করোনা মাতার পুজো করতে হবে তাদের, তবেই 'করোনা মাতা' রুদ্ররূপ ত্যাগ করে শান্ত হবেন। শুধু কুশিনগরই নয় করোনা মাতার পুজোর এই আয়োজনে সামিল হয়েছিলেন বারাণসী থেকে আসা মহিলারাও।
ভারত এই মুহূর্তে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সুনামিতে কার্যত হাবুডুবু খাচ্ছে। রোজই দেশে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা চিন্তার রেশ বজায় রেখেছে। এই অবস্থায় কোভিডের শৃঙ্খল রুখতে দেশের প্রায় সব রাজ্যই হেঁটেছে লকডাউনের পথে। তারপরও অনেক রাজ্যও এখনও হাবুডুবু খাচ্ছে তাদের হাতে থাকা চিকিৎসা পরিকাঠামো দিয়ে মানুষের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাটুকু করতে। উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি জায়গায় গঙ্গায় মৃতদেহ ভেসে যাওয়ার ছবি দেখে শিউরে উঠেছে দেশবাসী। গঙ্গার পাড়ে কার্যত কোভিড মৃতদেহ দেওয়া হচ্ছে গণকবর। এতসবের মাঝেও এভাবে শারীরিক দূরত্ববিধি থেকে একাধিক কোভিড নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে পুজোর খবরে কার্যত শোরগোল পড়ে গিয়েছে নেটমহলে।
কয়েকদিন আগেই গুজরাট-অন্ধ্রপ্রদেশেও দেখা গিয়েছিল কার্যত একইরকম ছবি। ধর্মের নামে যেখানে অন্ধবিশ্বাসের এক মোড়ক যেখানে সাধারণ মানুষকে আষ্টেপৃষ্টে এখনও যে কীভাবে বেঁধে রেখেছে, পরিষ্কার হয়ে উঠেছিল সেটাই। যেমন এদিন 'করোনা মাই' তথা 'করোনা মাতা'র পুজো দেওয়ার পর এক জনৈক ভদ্রমহিলার বক্তব্য, একাধিক পন্ডিত তাদের বলেছেন এভাবেই টানা ২১ দিন পুজো করলে তবে করোনা মাতার রুদ্রমূর্তিকে শান্ত করা যাবে। ভ্যাকসিন ভোগান্তির করুণ দৃশ্য যখন দেশজুড়ে তখন পুজো দিতে যাওয়া মহিলাদের দাবি, মায়ের আর্শীবাদ পেলেই অতিমারী দূর হয়ে যাবে। আর অন্য কোনওকিছুর প্রয়োজন নেই।
নেটমহলে আপাতত যে পুজো নিয়ে চর্চা চললেও স্থানীয় প্রশাসন ঠিক কী পদক্ষেপ এখনও পর্যন্ত নিয়েছে এই করোনা মাতার পুজো নিয়ে, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। এদিনই আবার উত্তরপ্রদেশের গ্রামাঞ্চলে করোনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার জেরে ২৪ মে পর্যন্ত সেখানে লকডাউন বাড়িয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।