নয়াদিল্লি: আগামীকাল সংক্ষিপ্ত অথচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সফরে ভারতে আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মাত্র কয়েক ঘণ্টার এই সফরে ভারত ও রাশিয়ার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতির প্রয়াস নেমে দুই দেশ। সেইসঙ্গে বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে মহাকাশ প্রযুক্তি ও অস্ত্র উৎপাদন ক্ষেত্রে প্রায় এক ডজন চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। 


পদস্থ আধিকারিক সূত্রে খবর, রুশ প্রেসিডেন্ট আগামীকাল দুপুরের পর ভারতে পৌঁছবেন এবং ভারতে মাত্র ৬-৭ ঘণ্টা থাকবেন। এরইমধ্যে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন স্তরে আলাপ আলোচনা হবে। এরইমধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রুশ প্রেডিডেন্ট পুতিনের মধ্যে ২১ তম পর্বের ভারত-রাশিয়া শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হবে। 


আগামীকাল সন্ধে সাড়ে পাঁচটায় হায়দরাবাদ হাউসে দুই নেতার বৈঠক হবে। এরইমধ্যে দুই নেতার সরকারি ও ঘরোয়া কথাবার্তাও হবে। করোনার ওমিক্রন ভাইরাস নিয়ে ক্রমবর্দ্ধমান উদ্বেগের মধ্যে কোভিড প্রোটোকলের পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের আলাপ আলোচনায় অংশগ্রহণকারী আধিকারিকদের সংখ্যা সীমিত রাখা হয়েছে। সোমবারই রাত সাড়ে নটায় সময় দেশের উদ্দেশে রওনা দেবেন পুতিন। 


বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ভারত ও রাশিয়ার শীর্ষ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের অগ্রগতি ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সহযোগিতার নয়া অধ্যায়ের সূচনা হবে। এরইমধ্যে দুই দেশের মধ্যে ২ প্লাস ২ আলোচনাও হবে। বিশেষ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের এই যুগ্ম বৈঠকের সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রেডিডেন্ট পুতিনের মধ্য়ে ২০২১-এর এপ্রিলে টেলিফোনে কথপোকথনের সময় নেওয়া হয়েছিল। 


রুশ বিদেশমন্ত্রী সার্গেই লাভেরভ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী সারগেই শেরগিউ পুতিনের একদিন আগেই ভারতে পৌঁছচ্ছেন। ৬ ডিসেম্বর ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে আরও এক দফা প্রতিরক্ষামন্ত্রী সৈন্য ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও আন্তঃসরকারি গোষ্ঠীর বৈঠকে সামিল হবেন। সেইসঙ্গে ওই সময় দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীদের মধ্যেও সমান্তরাল বৈঠক হবে। এরপর দুই দেশের প্রতিরক্ষা ও বিদেশমন্ত্রীদের ২ প্লাস ২ আলোচনার টেবিলে অংশদারিত্বের পরিকল্পনা বৃদ্ধির অগ্রগতি নিয়ে কথা হবে। 


আধিকারিক সূত্রে খবর, দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা হবে। এরমধ্যে আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ বাণিজ্য করিডোর মতো বড়সড় পরিকল্পনার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে। এই করিডোরের মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে মধ্য এশিয়া ও রাশিয়ার যোগাযোগের পথ প্রশ্বস্ত হবে। ইরানে নির্মীয়মান চাবাহার বন্দরের সঙ্গে আইএনএসডিসি-কে যুক্ত করার প্রস্তাব ভারত আগেই দিয়ে রেখেছে। 


পুতিন ও মোদির বৈঠকে একে-২০৩ অ্যাসল্ট রাইফেলের যৌথ উৎপাদন চুক্তিতে স্বাক্ষর হবে। তাঁদের মধ্যে এস ৪০০ মিসাইল সিস্টেম নিয়েও কথা হবে বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও আফগানিস্তান সহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে দুই নেতার মত বিনিময় হবে।