মুম্বই: সাসপেন্ড করা হল বলিউড অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউতের ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট। অভিযোগ, অভিনেত্রীর করা কয়েকটি পোস্ট মাইক্রো ব্লগিং সাইট সংস্থার নীতি লঙ্ঘন করেছে।


পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে আপত্তিজনক মন্তব্য় করেন কঙ্গনা বলে অভিযোগ। এমনকী, ভোট-পরবর্তী হিংসার জন্যও মমতার তীব্র সমালোচনা করেন বলিউড অভিনেত্রী। 


পরের পর ট্যুইট করে বেনজির আক্রমণ করেন তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কোনওটায় বাংলাকে কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করেন। আবার কখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'রাবণ' বলে কটাক্ষ করেন অভিনেত্রী।



ভোটের ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই একের পর এক ট্য়ুইট করেন কঙ্গনা। একটি ট্যুইটারে তিনি লিখেছেন, 'বাংলাদেশী আর রোহিঙ্গারাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল শক্তি। তথ্য বলছে, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুরা আর সংখ্যাগরিষ্ঠ নেই। আর বাঙালি মুসলিমরা হল ভারতবর্ষের মধ্যে সবচেয়ে সবচেয়ে গরীব। বাংলায় একটা কাশ্মীর তৈরি হচ্ছে।' 


এখানেই থামেননি কঙ্গনা। অন্য একটি ট্যুইট করে তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেন তিনি। আরামবাগে বিজেপির পার্টি অফিসে আগুন লাগানোর খবরের একটি ট্যুইট রিট্যুইট করে তিনি লিখেছিলেন, 'আগামীদিনে বাংলায় রক্তস্নান হবে। সরকার হেরে যাওয়ার ভয়ে রক্ত পিপাসু হয়ে উঠবে।' কখনও আবার অমিত শাহকে ট্যুইটারে ট্যাগ করে বাংলায় বিজেপি কর্মীদের বাঁচাবার আবেদন জানিয়েছেন কঙ্গনা।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের জয়লাভ ঘোষণা হওয়ার পর তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ট্যুইট করেন কঙ্গনা। কিন্তু সেই ট্যুইটেও ছিল তীব্র খোঁচা। একটি ট্যুইট করে কঙ্গনা লেখেন, ২০১৯-এ লোকসভা ভোটে ধাক্কা খাওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন বাঘিনীর মতই লড়াই করেছেন এই বিধানসভা নির্বাচনে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামতে দেয়নি। সিএএ, এনআরসিকে আটকেছেন। মোদিকে খেলায় আহ্বান করেছেন। একেবারে খোলাখুলি শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছেন, তাঁদের ভোটার কার্ড দিয়েছেন। গণতন্ত্র এখানে রসিকতা। তবু আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্যালুট জানাচ্ছি। কারণ যদি ভিলেন হতেই হয় তাহলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো হন। রাবণের মত লড়াই করুন। রাহুল গাঁধীর মত গোগো না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ী হওয়াই উচিত।'


ট্যুইট বন্যার জেরে কঙ্গনার বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন এক আইনজীবী। অভিযোগ, বাংলার আইনশৃঙ্খলার ভারসাম্য নষ্ট করতে চাইছেন কঙ্গনা। তিনি বলেছেন, ‘বাঙালি এবং বাংলার বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্য করেছেন কঙ্গনা রানাউত। বিজেপি-র পক্ষ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অশান্তি ছড়াতে চাইছেন কঙ্গনা। বাংলার আইনশৃঙ্খলার ভারসাম্য করতে এনআরসি এবং সিএএ-র সমর্থনে কথা বলে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি।’ আজ ই-মেল মারফত অভিযোগ জানালেন আইনজীবী সুমিত চৌধুরী।


আর এবার, কঙ্গনার ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট সাসপেন্ড করা হল।