কানপুর: রাষ্ট্রপতি আসার জন্য বন্ধ ছিল রাস্তা। আর ওই পথেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল এক অসুস্থ মহিলাকে। সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে না পারায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর।


ঘটনা সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের কানপুরে। এই ঘটনায় মহিলার পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।


তিন দিনের সফরে কানপুরে গিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এই সফরে নিজের গ্রামেও যাবেন তিনি। শুক্রবার রাতে ট্রেনে কানপুরে পৌঁছন রাষ্ট্রপতি। এরপর সড়ক পথে রওনা দেয় তাঁর কনভয়। 


ওই সময়ে কানপুরের ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডাস্ট্রিজের মহিলা শাখার প্রধান বন্দনা মিশ্র অসুস্থ হয়ে পড়ায়, তাঁকে নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন পরিবারের সদস্যরা।


তাঁদের দাবি, রাষ্ট্রপতির কনভয় যাওয়ার সময় ব্যাপক যানজটে আটকে যায় তাঁদের গাড়ি। অনেকটা দেরি হয়ে যায় সেখানে।
৫০ বছর বয়সী বন্দনাকে নিয়ে তাঁরা যখন হাসপাতালে পৌঁছন, ততক্ষণে সব শেষ। পরিবার সূত্রে খবর, সম্প্রতি কোভিড থেকে সেরে উঠেছিলেন বন্দনা। 


মহিলার স্বামী শরদ মিশ্র জানান, হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁরা গোবিন্দপুরী সেতুর কাছে আটকে পড়েন। তিনি দাবি করেন, বারংবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও পুলিশ তাঁদের অনুরোধে কর্ণপাত করেনি। 


তিনি বলেন, আমাদের বলা হয়, ট্রাফিক খুললে তবেই আমাদের যেতে দেওয়া হবে। হাসপাতালে পৌঁছলে চিকিৎসকরা বন্দনাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা জানান, সময়ে নিয়ে আসলে, হয়ত তাঁর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হতো।


মর্মান্তিক এই ঘটনার কথা সামনে আসতেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের তীব্র সমালোচনা শুরু যায়। চাপের মুখে ক্ষমা চেয়ে কানপুরের পুলিশ কমিশনার অসীম অরুণ ট্যুইট করেন, বন্দনা মিশ্রর মৃত্যুতে গভীর ভাবে শোকাহত। ভবিষ্যতের জন্য এটা আমাদের বড় শিক্ষা। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি ভবিষ্যতে এই ধরনের কোনও ঘটনার ফলে যাতে রোগীদের কোনও সমস্যা না হয় সে দিকে নজর দেব। 


এই ঘটনায় এক অফিসার সহ চার পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সাব-ইনস্পেক্টর সুশীল কুমার ও তিন হেড কনস্টেবলকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার এক অফিসারকে। রিপোর্ট জমা করতে বলা হয়েছে কমিশনারের দফতরে।