নয়াদিল্লি : শিক্ষার কোনও বয়স হয় না, বয়স হয় না স্বপ্নপূরণের। মা - বাবা অনেক সময় নিজের স্বপ্নপূরণ করতে চান সন্তানের মাধ্যমে। এই মা স্বপ্নপূরণ করলেন সন্তানের হাতে হাত রেখে। একসঙ্গে। বয়সকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে উদাহরণ সৃষ্টি করলেন কেরলের মালাপ্পুরমের এই মহিলা।
মালাপ্পুরমের এই ৪২ বছরের মহিলা ও তাঁর ২৪ এর ছেলের জীবনে সাফল্য এল একসঙ্গে। একসঙ্গে চাকরির পরীক্ষায় সফল হলেন তাঁরা। পাস করলেন পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) পরীক্ষা। স্বপ্ন ছুঁলেন মায়ে-পোয়ে মিলে। খবরটি সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে।
একসঙ্গে কোচিং ক্লাসে যেতেন মা-ছেলে
সংবাদ সংস্থাকে ওই মহিলার ছেলে বিবেক জানিয়েছেন, " আমরা এক সঙ্গে কোচিং ক্লাসে যেতাম। আমার মা আমাকে এখানে নিয়ে এসেছিলেন এবং আমার বাবা আমাদের জন্য সমস্ত সুবিধার ব্যবস্থা করেছিলেন। আমরা শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক অনুপ্রেরণা পেয়েছি। আমরা দুজনেই একসঙ্গে পড়াশোনা করেছি কিন্তু কখনও ভাবিনি যে আমরা একসঙ্গেই সাফল্য পাব। আমরা দুজনেই খুব খুশি" ।
সরকারি চাকরি করতে তৈরি কীভাবে
বিবেক যখন ক্লাস টেন-এ পড়তেন, মা বিন্দু তাঁকে উত্সাহিত করার জন্য পড়াশোনা শুরু করেন। এই করতে করতেই মা উৎসাহ পেয়ে যান। কেরল পিএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হওয়ার কথা ভাবেন তিনি। নয় বছর ধরে করেন প্রস্তুতি। তারপর তিনি এবং তাঁর ছেলে হাতে হাত রেখে পরীক্ষায় পাশ করেন। এখন তাঁরা একটি সরকারি চাকরি করতে তৈরি!
বিন্দু লোয়ার ডিভিশনাল ক্লার্ক (এলডিসি) পরীক্ষায় ৩৮ নম্বর পেয়ে পাস করেছেন। ছেলে ৯২ Rank পেয়েছেন লাস্ট গ্রেড সার্ভেন্টস (এলজিএস) পরীক্ষায়। তিনবার প্রচেষ্টার পর, বিন্দুর চতুর্থ প্রচেষ্টা সফল হয়েছে।
বিন্দু গত ১০ বছর ধরে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি বলেন যে তাঁর বন্ধুরা, তাঁর ছেলে এবং তাঁর কোচিং সেন্টারের প্রশিক্ষকরা বরাবর উৎসাহ জুগিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, একটানা পড়াশোনা করেননি। পরীক্ষার ছয় মাস আগে থেকে জোরকদমে পড়াশোনা শুরু করেন। তারপর, তিন বছর পর পরের রাউন্ডের পরীক্ষার ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তিনি বিরতি নিতেন।
তিনি মনে করেন, কীভাবে কঠোর পরিশ্রম হাতেনাতে ফল দেয়, তিনিই তাঁর উদাহরণ। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কেরলে স্ট্রিম-২ পদের বয়সসীমা ৪০, তবে নির্দিষ্ট বিভাগের জন্য কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। যেমন অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর জন্য শিথিলতা আছে তিন বছরের , তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং বিধবাদের জন্য, পাঁচ বছরের জন্য বয়সসীমা শিথিল করা হয়।