সঞ্জয় ত্রিপাঠি, নয়াদিল্লি : গাড়ির চাকায় পিষে একসঙ্গে এতজন কৃষকের মর্মান্তিক মৃত্যু! বিজেপি সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে FIR! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের ধারায় মামলা! উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর নিয়ে অগ্নিগর্ভ রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেশে। এরই মধ্যে সূত্রের খবর আজ উত্তরপ্রদেশ পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিস মিশ্র।
কৃষকদের অভিযোগ, লখিমপুর খেরিতে তাঁরা যখন রাস্তার একপাশ দিয়ে মিছিল করে যাচ্ছিলেন, তখন বিনা প্ররোচনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিসের দলবল কৃষকদের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন। ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে দায়ের হয়েছে এফআইআর-ও। তবে, লখিমপুরকাণ্ডে অভিযোগ যাঁদের বিরুদ্ধে, সেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র এবং তাঁর ছেলে আশিস মিশ্র অবশ্য ঘটনাস্থলে থাকার কথাই অস্বীকার করেছেন। পাল্টা কৃষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা।
লখিমপুরের ঘটনায় দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের পর নিহত গুরবিন্দর সিংয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের নজরদারিতে কৃষক সংগঠনের নেতা রাকেশ টিকায়েত ও নিহত কৃষকের পরিবারের সদস্যরা শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, নিহত কৃষক গুরবিন্দর সিংয়ের পরিবারের দাবি মেনেই দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত হয়েছে।
প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর পর এবার রাহুল গাঁধীকেও লখিমপুরে যাওয়ার অনুমতি দিল না উত্তরপ্রদেশ সরকার। আজ রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদলের লখিমপুর খেরিতে যাওয়ার কথা ছিল। যোগী সরকারের তরফে জানানা হয়েছে, আপাতত ওই অঞ্চলে শান্তি বজায় রাখাই প্রশাসনের মুখ্য কাজ। সেই কারণেই কাউকে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে না। লখনউতে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। যদিও লখিমপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা ও রাজস্থানের উপ মুখ্যমন্ত্রী সচিন পায়লট। এদিকে, গতকাল লখনউ বিমান বন্দরে তাঁকে আটকে দেওয়া হলেও আজ ফের লখিমপুর যাবেন বলে জানিয়েছেন ছত্তীসশগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল। এর পাশাপাশি, সীতাপুরে গৃহবন্দি প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বন্ড দিয়ে জামিন নিতে অস্বীকার করেছেন। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের অভিযোগ, তাঁকে গৃহবন্দি রাখা হলেও দেখানো হয়নি এফআইআরের কপি। এমনকি আইনজীবীর পরামর্শও নিতে দেওয়া হচ্ছে না। সীতাপুরের গেস্ট হাউসের আশেপাশে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে লখিমপুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্রমশ চড়ছে রাজনৈতিক পারদ।