নয়া দিল্লি : আট দশক ধরে ভারতীয় সঙ্গীত জগতে রাজ করেছেন। তাঁর সুরের মূর্ছনায় মেতে উঠেছে আসমুদ্র হিমাচল। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বের সঙ্গীত-প্রেমীরা তাঁর কণ্ঠে আজও মোহিত। এহেন সুর সম্রাজ্ঞী চলে গেলেন বাণী-বন্দনার পরের দিনেই। স্তব্ধ গোটা দেশ। তাঁর গলার ভক্ত ছিলেন না, এমন মানুষ বোধ হয় খুঁজেই পাওয়া যাবে না। আর এসব কারণেই তাঁকে একাধিক নামে সম্বোধন করা হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। "ক্যুইন অফ মেলোডি", ভারতের "নাইটিঙ্গল" । ভারতীয় সঙ্গীত জগতে তাঁর অবদানের জন্য পেয়েছেন সর্বোচ্চ সম্মান- "ভারতরত্ন" (Bharat Ratna), "দাদা সাহেব ফালকে (Dada Saheb Phalke)" পুরস্কার।
পাঁচ ভাই-বোনের সবথেকে বড় লতা জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর। ইন্দোরে একটি মারাঠি পরিবারে জন্ম তাঁর। যা আগে সেন্ট্রাল ইন্ডিয়া এজেন্সির অন্তর্ভুক্ত ছিল। এখন অবশ্য মধ্যপ্রদেশের অন্তর্ভুক্ত। তাঁরা বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর একজন ধ্রুপদী সঙ্গীতের গায়ক ছিলেন। এর পাশাপাশি একজন নামী থিয়েটার শিল্পীও ।
আরও পড়ুন ; "পয়সা নয়, শুধু আপনার জন্যই গাইছি", লতার কথায় চমকে গিয়েছিলেন হেমন্ত মুখোপাধ্যায়
তাঁর মা শেবন্তী ছিলেন বম্বে প্রেসিডেন্সির থালনেরের একজন গুজরাতি মহিলা। যা এখন উত্তর-পশ্চিম মহারাষ্ট্রের অংশ বিশেষ। শেবন্তী ছিলেন দীননাথের দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী (শেবন্তীর বড় দিদি) নর্মদার বোন। নর্মদার মৃত্যুর পর শেবন্তীর সঙ্গে বিয়ে হয় দীননাথের।
মাত্র ৫ বছর বয়সেই বাবার প্রশিক্ষণে ক্ল্যাসিকাল মিউজিকের ভালবাসায় পড়ে যান লতা। দীননাথ ছিলেন গোয়ালিয়র ঘরানার শিষ্য। যাদের ছিল নিজস্ব স্টাইল। লতাকে সঙ্গীত-পাঠ দেন আমনআলি খান সাহেব ও আমানত আলি খান।
বাবার মৃত্যুর পর মাত্র ১৩ বছর বয়সেই তাঁর ঘাড়ে চলে আসে সংসারের দায়িত্ব। এই বয়সেই তিনি প্রথম গান রেকর্ড করেন। 'কিতি হাসাল' নামে একটি মারাঠি ছবির জন্য। যদিও গানটির ফাইনাল সম্পাদনা হয়নি। কৈশোর বয়সেই পরিবারকে সাহায্য করার লড়াই শুরু হয় লতার। এর সাথে সাথে বলিউডে পা দেওয়ারও।
তাঁর প্রথম হিন্দি গান ছিল- 'মাতা এক সপুত কি দুনিয়া বজল দে তু' ।