ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: জল থেকেও কি ছড়াতে পারে করোনা ভাইরাস?  সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের গ্রাফ নিম্নমুখী হলেও, তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে অনেকের। এই পরিস্থিতিতে উদ্বেগ আরও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে দেশের দুই সংস্থার গবেষণার রিপোর্টে। 


সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে আমদাবাদের কাছে সবরমতীর জলে।  আইআইটি গাঁধীনগর ও জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অফ এনভায়রনমেন্ট সায়েন্সের গবেষণায় উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।


একইসঙ্গে দাবি করা হয়েছে, আমদাবাদ শহরের দু’টি হ্রদ -- কাঁকরিয়া ও চান্দোলার জলের নমুনা থেকেও করোনা ভাইরাস মিলেছে।


আইআইটি গান্ধীনগর ও জেএনইউয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, ২০১৯-এর ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সপ্তাহে একবার করে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।


সবরমতী নদী থেকে ৬৯৪টি, চান্দোলা ও কাঁকরিয়া হ্রদ থেকে যথাক্রমে ৫৪৯ এবং ৪০২টি নমুন সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়।


আর সেই পরীক্ষাতেই উঠে এসেছে ভয়ঙ্কর তথ্য। গান্ধীনগর আইআইটির অধ্যাপক মণীশ কুমার জানিয়েছেন, সবরমতী নদী ও ২টি হ্রদে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।


জলবাহিত সংক্রমণের তত্ত্বের সম্ভাবনার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বিশেষজ্ঞরাও। ফুসফুস বিশেষজ্ঞ কৌশিক চক্রবর্তী বলেন, এটা তো হতেই পারে, জলে অনেক কিছুই থাকে, ভাইরাস থাকা সম্ভব, কন্টামিনেশন হতে পারে। 


আরেক ফুসফুস বিশেষজ্ঞ রাজা ধর বললেন, এটা আশ্চর্য, চিন্তা বাড়ল, আরও সাবধান হতে হবে। চিকিৎসক ধ্রুবজ্যোতি ভট্টাচার্য বলেন, জলে জীবাণু আছে, আগেও দেখেছি, এবার হতে পারে, জলের মধ্যে দিয়ে শরীরে যেতে পারে। 


এই অবস্থায় গবেষকরা চান, দেশজুড়ে নদী, হ্রদ, পুকুরেও একই ধরনের নমুনা পরীক্ষা করা হোক।


এদিকে, দেশে ৬-৮ সপ্তাহের মধ্যে আছড়ে পড়তে চলেছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। উদ্বেগ বাড়িয়ে এই আশঙ্কা প্রকাশ করলেন এইমসের অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়া।


তিনি জানিয়েছেন, কোভিড-সতর্কতা সঠিকভাবে না মানার কারণেই ভারতে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এইমস-অধিকর্তার দাবি, আনলক প্রক্রিয়া শুরু হতেই কোভিড-বিধি সচেতনতা উপেক্ষা করার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।


এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রণদীপ গুলেরিয়া।