অওরঙ্গাবাদ: চাষের কাজে আর আগের মতো আয় নেই। কোনও রকমে সংসারটুকুও চালানো দায় হয়ে উঠেছে। তাই অ্যাকাউন্টে টাকা প্রথমে বিশ্বাসই করতে পারেননি গিয়েছিলেন জ্ঞানেশ্বর ওটে (Gyaneshwar Ote)। কিন্তু নিজের চোখকে বিশ্বাস না করতে পারলেও, বিশ্বাস ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) কথায়। তাই অ্যাকাউন্টে টাকা ফেলে প্রধানমন্ত্রী কথা রেখেছেন বলে ধরে নেন তিনি। কিন্তু ছ’মাস পর যখন ভুল ভাঙল, সব হারিয়ে পথে বসার জোগাড় জ্ঞানেশ্বরের।
মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) অওরঙ্গাবাদ (Aurangabad) জেলার পৈঠান তালুকের বাসিন্দা জ্ঞানেশ্বর (Maharashtra Farmer)। প্রধানমন্ত্রীর কথা মতো বেশ কয়েক বছর আগে ‘জন ধন’ (Jan Dhan Account) অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন তিনি। কিন্তু রোজগারই নেই যখন অ্যাকাউন্টে টাকা রাখবেন কোত্থেকে! কিন্তু ২০২১ সালের আগস্ট নাসে করোনায় যখন চারিদিক বিধ্বস্ত, সেই সময় অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে দেখে কার্যতই আহ্লাদে আটখানা হয়ে পড়েন তিনি। দিল্লির ঠিকানায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখে ফেলেন একখানা। ১৫ লক্ষ টাকা অ্যাকাউন্টে জমা দিয়ে কথা রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান মোদিকে।
এর পর আর আগুপিছু ভাবেননি জ্ঞানেশ্বর। ব্যাঙ্ক বরোদার যে শাখায় ‘জন ধন’ অ্যাকাউন্ট ছিল, সেখানে গিয়ে সব মিলিয়ে প্রায় ন’লক্ষ টাকা তুলে ফেলেন। সেই টাকা দিয়ে বাড়ি তৈরির কাজে হাজ দেন নিশ্চিন্ত হয়ে। কিন্তু সম্প্রতি ব্যাঙ্কের নোটিস পেয়ে আক্ষরিক অর্থেই মাথায় বাজ পড়ে জ্ঞানেশ্বরের। জানেত পারেন, ভুল করে তাঁর অ্যাকাউন্টে ওই টাকা জমা পড়ে গিয়েছে। তাই সব টাকা অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে তাঁকে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এলাকার উন্নয়নের জন্য পিম্পলওয়াড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের অ্যাকাউন্টে আসলে ওই টাকা যাওয়ার কথা ছিল। ভুলবশত তা জ্ঞানেশ্বরের অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। প্রায় চার মাস পর টাকা না আসায় সন্দেহ হয় ওই পঞ্চায়েত প্রধানের। সেই মতো খোঁজ নিতে শুরু করলে ভুল ধরা পড়ে। তাতেই জ্ঞানেশ্বরকে নোটিস ধরানো হয় ব্যাঙ্কের তরফে।
কিন্তু এই গোটা ঘটনায় বিপাকে পড়েছেন জ্ঞানেশ্বর। বাডি় তৈরির প্রয়োজন ছাডা় একটি টাকাও বাড়তি খরচ করেননি তিনি। তাই অ্যাকাউন্টে পড়ে থাকা ৬ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ককে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বাকি ৯ লক্ষ কোথা থেকে আনবেন, তা নিয়ে ভাবতে গেলেই সব ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে তাঁর।