মুম্বই: পালা করে আড়াই বছর করে ক্ষমতায় থাকা নিয়েই দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছিল। তার জেরেই ভেঙে গিয়েছিল বিজেপি-শিবসেনার (Shiv Sena) কয়েক দশক পুরনো জোট। গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এনসিপি এবং কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়েন উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray)। বিক্ষুব্ধ শিবসেনা বিধায়কদের বিদ্রোহে আড়াই বছরেই উদ্ধবের সেই সরকার পড়ে গেল। আর তাতেই ফের মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা দখলের পথে বিজেপি (BJP)। গত দু'সপ্তাহ ধরে চলে আসা এই বিদ্রোহপর্বে দেবেন্দ্র ফড়ণবীসকেই (Devendra Fadnavis) নেপথ্য নায়ক হিসেবে ধরা হচ্ছিল। এর আগেও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখা গিয়েছে তাঁকে। জোট ভাঙার পর ৮০ ঘণ্টার জন্যও মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। শিবসেনার বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের হাত ধরে একবার ফের মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে চলেছেন ফড়ণবীস। ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল ভগৎ সিংহ কোশিয়ারির সঙ্গে রাজভবনে সাক্ষাৎ সেরেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সন্ধে ৭টায় তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন বলে খবর। 


মহারাষ্ট্রের মসনদে ফের বিজেপি


এখনও পর্যন্ত যে খবর মিলেছে, সেই অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন ফড়ণবীস। তাঁর উপমুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন শিবসেনার অন্দরে বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেওয়া একনাথ শিন্ডে। মহারাষ্ট্রে বিজেপি-র সভাপতি চন্দ্রকান্ত দাদা পাটিল, দলের বর্ষীয়ান নেতা সুধীরমুঙ্গনতিওয়ার, গিরীশ মহাজন, প্রাক্তন মুম্বই মহাজন সভাপতি আশিস শেলার, প্রবীণ দারেকর, অনগ্রসর শ্রেণির নেতা চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে, বিজয়কুমার দেশমুখ, গণেশ নায়েক, রাধাকৃষ্ণ ভিকে পাটিল, সম্ভাজী পাটিল নিলাঙ্গেকর, রবীন্দ্র চহ্বণ, অশোক উইকে, সুরেশ খাড়ে, জয়কুমার রওয়াল, অতুল দাভে, দেবযানী ফারান্ডে, রণধীর সাভারকর এবং মাধুরী মিসাল মন্ত্রিত্ব পেতে চলেছেন। বিজেপি-র ২৫, এবং শিন্ডে শিবিরের ১৩ জন বিধায়ক মন্ত্রিত্ব পেতে চলেছেন বলে খবর।



আরও পড়ুন: Shiv Sena Tussle: 'উদ্ধবই আমাদের নেতা', বিক্ষুব্ধ বিধায়কের গলায় উল্টো সুর, শিবসেনার নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারবেন বালাসাহেব-পুত্র!


এ দিন সন্ধেয় মহারাষ্ট্রে ফের বৈঠক রয়েছে বিজেপি-র। নয়া সরকার গড়ার আগে সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে একাধিক বিষয়ে। কাকে কোন দফতর দেওয়া হবে, সেই নিয়েও বিশদ আলোচনা হতে চলেছে ওই বৈঠকে। তবে মুখ্যমন্ত্রী পদে ফড়ণবীস এবং তাঁর ডেপুটি হিসেবে শিন্ডের নাম পাকা হয়ে গিয়েছে। তাই রাজভবনে একা নন, শিন্ডেকে সঙ্গে করেই রাজ্যপালের কাছে গিয়েছিলেন ফড়ণবীস। শিন্ডে শিবিরের বিধায়ক ছাড়াও বেশ কিছু নির্দল বিধায়কও ফড়ণবীস-শিন্ডের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। 


উদ্ধবের পদত্যাগের একদিন পরই শপথ ফড়ণবীসের


উল্লেখ্য, প্রায় দু'সপ্তাহ ধরে টানাপোড়েনের পর বুধবার রাতে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন উদ্ধব। ছেড়ে দেন বিধান পরিষদের সদস্যতাও। সুপ্রিম কোর্টে আস্থাভোটের পক্ষে ভোট দেওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে ফেসবুক লাইভে এসে পদত্যাগের ঘোষণা করেন উদ্ধব। জানিয়ে দেন, কার কাছে কত বিধায়ক রয়েছে, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন নন তিনি। কাউকে ভয় পান না। সারাজীবন মারাঠা আবেগ, শিব সৈনিকদের জন্য কাজ করে গিয়েছেন, পদের মোহ কোনও কালেই ছিল না। তাই মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন। উদ্ধব ইস্তফা দেওয়ায় মহারাষ্ট্রে আর আস্থাভোট করানোর প্রয়োজন পড়েনি। তাতেই রাজ্যপালকে সটান সরকার গড়ার প্রস্তাব দেন ফড়ণবীস।