মাইসোর (কর্ণাটক) : ছোট্ট ছেলেকে রোজ খাওয়াতে হয় জীবনদায়ী ওষুধ। হঠাৎ করেই তা শেষ। মাঝে টানা লকডাউনের জেরে নিজের এলাকাতেও খোঁজ করেও পাননি ওষুধের খোঁজ। শেষমেশ টানা তিনদিন সাইকেল চালিয়ে ৩০০ কিলোমিটার পাড়ি দিলেন বাবা। মাইসোরের কাছে অবস্থিত কোপ্পালু গ্রাম থেকে সাইকেল নিয়ে রওনা দিলেন বেঙ্গালুরুর উদ্দেশ্যে। সেখান থেকে ওষুধ নিয়ে ফের একইভাবে গ্রামে ফিরে এলেন পেশায় রাজমিস্ত্রী আনন্দ। 


বেঙ্গালুরুর প্রখ্যাত হাসপাতাল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড নিউরো সায়েন্সেসে (নিমহ্যান্স) গত দশ বছর ধরে ছেলের চিকিৎসা করাচ্ছেন আনন্দ। ছেলের ছোটবেলা থেকেই স্নায়ুর জটিল সমস্যা। তাই জন্য টানা চিকিৎসা করানোর পাশাপাশি প্রত্যেক দু'মাস অন্তর সেখানে যেতে হয় ওষুধ আনতে। কিন্তু লকডাউন দীর্ঘায়িত হওয়ায় যানবাহন সবই বন্ধ। যার জেরে জীবনদায়ী ওষুধ পাওয়া নিয়ে চরম সমস্যায় পড়েন আনন্দ। তারপরই ঠিক করেন, সাইকেল চড়েই ওষুধ আনতে যাবেন তিনি।


ছেলের জন্য শেষমেশ মোট ৬ দিনে ৬০০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে ছেলের জন্য ওষুধ জোগাড় করে আনেন। যারপরই স্বস্তির হাসি ফোটে আনন্দের মুখে। তিনি বলেছেন, 'এখানে স্থানীয় সব দোকানেই ওষুধের খোঁজ করেছিলাম, কিন্তু কোথাও তা পাওয়া যায়নি। ডাক্তারবাবুরা বলে দিয়েছিলেন একদিনের জন্যও যেন ওষুধ খাওয়া বাদ না পড়ে। তাই সাইকেলে চড়ে বেঙ্গালুরু পাড়ি দিই। ওখানে গিয়ে পৌঁছতে ৩ দিন সময় লেগেছে।'


গত ২৩ মে যাত্রা শুরু করে ২৬ মে বেঙ্গালুরুতে পৌঁছেছিলেন আনন্দ। তারপরই ওষুধ নিয়ে ফিরে আসেন। নিমহ্যান্সে ওষুধ নেওয়ার মাঝে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করে গোটা ঘটনাও জানান আনন্দ। তিনি বলেছেন, সব শুনে ওই চিকিৎসক তাঁর হাতে হাজার টাকা তুলে দেন।


করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে বেশ কিছুদিন ধরেই লকডাউন চলছে কর্ণাটকে। সেখানকার রাজ্য সরকারের দেওয়া তথ্য জানাচ্ছে, সোমবার ১৬ হাজার ৬০৪ জন নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন কর্ণাটকে। মৃত্যু হয়েছে ৪১১ জনের।