কলকাতা: সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের হাজিরা নিয়ে বহুদিন ধরেই নানা অভিযোগ উঠছে । অনেক চিকিৎসকই নিয়ম মেনে নির্ধারিত সময়ে হাসপাতালে উপস্থিত থাকেন না, কিংবা হাসপাতালে ডিউটির সময়ে বাইরে অন্যত্র চেম্বার করেন, কোনও কোনও চিকিৎসক সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি ডিউটির সময়ই সপ্তাহের বেশ কয়েকদিন বেসরকারি হাসপাতালে রোগী দেখেন - অভিযোগ ভুরি ভুরি । যা নিয়ে এবার নড়েচড়ে বসল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন (National Medical Commission) ।
সরকারি হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে আরও কড়াকড়ি করা হচ্ছে । চালু হল ফেস বায়োমেট্রিক হাজিরা । দেশ জুড়ে চালু হল অ্যাপ নির্ভর ফেস বায়োমেট্রিক হাজিরা । পাকাপাকিভাবে বন্ধ পুরনো পদ্ধতিতে হাজিরা, নির্দেশ দিয়ে জানিয়ে দিল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন ।
জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন থেকে নির্দেশ পাঠিয়ে বলা হয়েছে, 'মোবাইলে নির্দিষ্ট অ্যাপের সাহায্যে দিতে হবে হাজিরা । হাসপাতালে না এসে অ্যাপ অন করে হাজিরা দেওয়া যাবে না । হাসপাতালের ১০০ মিটারের মধ্যেই অন করতে হবে অ্যাপ । যিনি যে হাসপাতালে কর্মরত, তার ১০০ মিটারের মধ্যেই কাজ করবে অ্যাপ । অ্যাপে থাকবে চিকিৎসকের আধার কার্ডের তথ্য । জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের সিস্টেমে দেওয়া হাসপাতালের লোকেশনের সঙ্গে মিলতে হবে । সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের মুখের সঙ্গে আধার কার্ডে থাকা মুখ মিললে তবেই হাজিরা প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে ।' চিকিৎসকদের বায়োমেট্রিক হাজিরায় ১ অক্টোবর থেকে চালু হয়েছে নতুন এই নিয়ম ।
গত জুন মাসেই পশ্চিমবঙ্গের সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলোতে ডাক্তারদের হাজিরা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন (NMC) । জুন মাসেই এক অনলাইন বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের ৮টি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের সামনে হাজিরার শোচনীয় অবস্থার জন্য এনএমসি কর্তারা ভর্ৎসনা করেছিলেন । সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম ও স্বাস্থ্য অধিকর্তা ইন্দ্রজিৎ সাহাও । এনএমসি সূত্রে খবর, কয়েকটি কলেজে শিক্ষকদের উপস্থিতির হার ৫০ শতাংশেরও নীচে । এই অবস্থা মেনে নেওয়া যায় না বলে কড়া অবস্থানের কথা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন । ৭৫ শতাংশের কম হাজিরা থাকলে বেতন বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল ।
এবার সেই কড়া অবস্থানই কার্যকর করার পথে হাঁটল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন ।